প্রামান্যচিত্রে পাকিস্তানিদের বর্ণনায় ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১

নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানী অত্যাচার, নির্যাতন ও বৈষম্যের প্রামাণ্যচিত্র ‘ক্ষমাহীন নৃশংসতা’। এটি নির্মাণ করেছেন কানাডা প্রবাসী প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ফুয়াদ চৌধুরী।

রুদ্র হকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2018, 12:00 PM
Updated : 20 March 2018, 12:15 PM

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ২২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও স্বাধীনতা উৎসব উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৭দিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ৭ দিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ২য় দিন, আগামী ২৩শে মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০মিনিটে প্রদর্শিত হবে ফুয়াদ চৌধুরী নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘ক্ষমাহীন নৃশংসতা: দ্য বাংলাদেশি জেনোসাইড থ্রু পাকিস্তানি আইস’।

বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপর পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বৈষম্য মূলক আচরণ, নিপীড়ন, শোষণ, বাঙালি জাতির প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিয়ে মিথ্যাচার এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের কর্তৃক সংগঠিত বাঙালি নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, গণহত্যা ও লুঠপাটের ঘটনা নিয়ে তৎকালীন পাকিস্তানি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সাংবাদিকের বয়ানে নির্মিত হয়েছে প্রামান্যচিত্রটি।

এতে অংশগ্রহনে প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশিষ্ট জনের মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তানের ৪জন ব্যক্তিত্ব।

যারা বিভিন্ন সময় বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়ায় বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপর নির্মম অত্যাচারের কথা প্রতিবাদী কন্ঠে তুলে ধরেছেন।

এই চারজন ব্যক্তিত্ব- রওশন জামির (১৯৭১ সালে যশোহর জেলার পাকিস্তানি প্রশাসক, পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান সরকারের ফেডারেল সেক্রেটারি হিসাবে অবসর নেন), সাংবাদিক তারেক খান (১৯৭১ সালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে শেষ কার্গো দিয়ে পাকিস্তানে ফেরত যান), মোয়াজ্জেম খান (১৯৭১ সালে স্কুল পড়ুয়া কিশোর মোয়াজ্জেম খান, বাবা ছিলেন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সে কারণেই জেনারেল নিয়াজীর প্রতিবেশী ছিলেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে) এবং লেখক ও কলামনিস্ট তারেক ফাতাহ।

প্রামান্যচিত্রটি প্রসঙ্গে নির্মাতা ফুয়াদ চৌধুরী গ্লিটজকে বলেন, “এই চার প্রত্যক্ষদর্শীসহ বিশিষ্ঠজনের বক্তব্য, বিশ্লেষণ, ক্ষোভ, তিরস্কার আর নিপীড়িত, নির্যাতিত, অসহায় বাঙালি নিধন যজ্ঞের ভয়াবহতার চিত্র নিয়ে নির্মাণ করার চেষ্টা করেছি প্রামাণ্যচিত্রটি।

দীর্ঘ চারবছর সময় লেগেছে এটি নির্মাণ করতে। সবচেয়ে কষ্ট হয়েছে পাকিস্তানী কর্মকর্তাদের রাজী করাতে।

এ প্রামাণ্যচিত্রটি এ জন্যই গুরুত্বপূর্ণ যে, যেসব পাকিস্তানী কর্মকর্তাদের জবানবন্দী নিয়েছি তারা তৎকালীন সময়ে পূর্ব পাকিস্তানেই কর্মরত ছিলেন।

প্রত্যেকেই উচ্চপদস্থ ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তাদের মুখ থেকে নেয়া জবানগুলো ঐতিহাসিকভাবেই একটি প্রমাণ রাখে যে, পাকিস্তানীরা আমাদের সাথে কী করেছিল।”

নির্মাতা জানান, এর আগে কানাডা ও নিউইয়র্কে দুটি প্রদর্শনীর পর এবারই প্রথম দেশে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে এটি।

দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় পর্যায় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রামাণ্যচিত্রটি প্রদর্শনের পরিকল্পনা করছেন তিনি।

২০১৮ সালে নির্মিত ৬১ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই প্রামাণ্যচিত্রটি প্রযোজনা করেছেন আমান উল্লাহ চৌধুরী।