গ্লিটজ: ‘সাহসী যোদ্ধা’ নামে নতুন আরেকটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হলেন। ছবিতে দীর্ঘদিন পর জুটি বাঁধছেন আমিন খানের সঙ্গে। অনুভূতি কেমন?
পপি: ছবিতে আমি একজন পুলিশ ইন্সপেক্টরের ভূমিকায় অভিনয় করছি। চরিত্রটির জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। শ্যুটিংও শুরু হয়েছে রোববার থেকে। আর আমিন ভাইয়ের সঙ্গে এর আগেও কাজ করেছি। অনেক ভালো মনের মানুষ। আশা করছি ভালো কিছুই হবে।
গ্লিটজ: এখন আপনার হাতে কয়টি চলচ্চিত্র আছে?
পপি: বেশ কয়েকটা আছে। কিন্তু নামগুলো এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
গ্লিটজ: শূন্য দশকজুড়ে আপনিসহ সমকালীন অন্যান্য অভিনয়শিল্পীদের উল্লেখ করার মতো চলচ্চিত্র হিটের তকমা পেয়েছিল। ২০১৮ সালে এসে হিট সিনেমার সংখ্যা হাতে গোনা। কারণ কী বলে মনে করছেন?
পপি: বিষয়টি নিয়ে বড় বড় বোদ্ধারা ভালো বলতে পারবেন। তবে একজন শিল্পী হিসেবে আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ হলো, সিনেমা হল নেই। আপনি যতই ভালো বিরিয়ানী রান্না করেন না কেন যদি সেটির পরিবেশন ভালো না হয় তাহলে কিছুই হবে না।
দর্শকরা হলে গিয়ে সিনেমা দেখবে কীভাবে? হলের পরিবেশই ভালো না। হলের স্ক্রিন ভালো না।
যতই ভালো আর্টিস্ট আনুন না কেন, এমনকি হলিউড থেকে আর্টিস্ট আনলেও ছবি চলবে না। আমার মতে, ইন্ডাস্ট্রির পতনের প্রধান কারণই হলো, সিনেমা হল। শতকরা হিসাবে বললে, এক থেকে ৯৫ ভাগই হলো সিনেমা হলের সমস্যা।
আরেকটি বিষয় হলো, দেশে ভালো মেকার নেই। তবে নায়ক-নায়িকার অভাব নেই! বছরে বছরে পাত্র-পাত্রীর বিয়ে-শাদির মতো ঘটা করে ইন্ডাস্ট্রিতে নায়ক-নায়িকা আনা হয়।
কিন্তু অনেকে কাজের অভাবে পরবর্তীতে কোটিপতিদের বিয়ে-শাদি করে সিনেমা ছেড়ে দেয়। কারণ যেখানে ভালো সিনেমাই হচ্ছে না সেখানে সে কতক্ষণ সারভাইভ করবে। কতদিন সংগ্রাম করবে?
আর্টিস্টদের অভাব না থাকলেও ইন্ডাস্ট্রিতে এখন ভালো নির্মাতাদের খুব অভাব। আমার আগের প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীরা আমজাদ হোসেন, সুভাষ দত্তকে পেয়েছেন। যার কারণে ভালো ছবিও উপহার দিয়েছেন।
আমি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সুভাষ দত্ত, আমজাদ হোসেন, সোহানুর রহমান সোহান, মনতাজুর রহমান আকবরকে পেয়েছি। কিন্তু তারা এখন আর তেমন কোনো সিনেমাই করছে না। তারা এখন কোথায়?
গ্লিটজ: এখনও তো অনেক নির্মাতাই ভালো ছবি নির্মাণ করছেন...
পপি: তা ঠিক। বর্তমানে যারা নির্মাণ করছেন তারাও খুব ভালো কাজ করছেন। তবে অনেকে টিভি রিলেটেড আর্টিস্ট নিয়ে বেশি কাজ করে।
আরেকটি বিষয় হলো, আগের মতো বড় বড় প্রোডাকশন হাউজগুলো এখন আর নাই। মাঝখানে আবার ডিজিটাল ছবি আসার পরে ইন্ডাস্ট্রির আরও অবক্ষয় হয়েছে।
গ্লিটজ: ডিজিটাল চলচ্চিত্রকে তো অনেকে সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন। আপনার মতে, চলচ্চিত্রের অবক্ষয়ের কারণ হিসেবে ডিজিটাল চলচ্চিত্র দায়ী কেন?
পপি: আসলে ইতিবাচক কিছু হয়নি। কিছু সস্তা ছবি বানাচ্ছে। সস্তা মেকিং, সস্তা কাস্টিং। এগুলো পুরোপুরি ছবি না। আমরা যারা পুরোপুরি ছবিতে কাজ করে অভ্যস্ত, রাষ্ট্রীয়ভাবে যেখানে আমি সম্মানিত ও স্বীকৃত।
আমার একক নামের উপর ছবি হিট করেছি। কোনো আর্টিস্ট কোনো ডিরেক্টরের উপর নির্ভর করিনি। কিন্তু এগুলোকে পুরোপুরি ছবি বলে মনে হচ্ছে না।
গ্লিটজ: আপনার বরাত দিয়েই যদি বলি, বর্তমানে চলচ্চিত্রের অবস্থা খুব আশাব্যঞ্জক না। ২০১৮ সালে এসে অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি আছে?
পপি: এটা আসলে যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি আসলে কারো গ্যারান্টি দিতে পারব না। তবে এটা বলতে পারি, অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে গেলে এখন খুব বেশি স্ট্রাগল করতে হবে।
আর অনেকেই তো ছবি না পেয়ে বিয়ে-শাদি করে ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তবে আমি কিন্তু আছি। আরো অনেকদিন আমি কাজ করতে চাই।
গ্লিটজ: ক্যারিয়ারজুড়ে আপনাকে নিয়ে প্রচুর গুজব ছড়িয়েছে। বিশেষ করে শাকিল খানের সঙ্গে আপনার প্রেম নিয়ে...
পপি: শাকিলের সঙ্গে আমার খুব ভালো রিলেশন ছিল, প্রেম ছিল। কিন্তু শাকিলকে কখনোই আমি বিয়ে করিনি। এটা নিয়ে দর্শকদের ও কিছু মানুষের ভ্রান্ত ধারণা আছে।
গ্লিটজ: ক্যারিয়ারের মাঝপথে এ ধরনের গুজব ক্যারিয়ারকে কতটা প্রভাবিত করেছিল?
পপি: একটু তো ঝামেলা গেছেই। যেহেতু শাকিল অনেক ঝগড়া করেছিল। আমাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছিল। ওই সময় খুব চাপে ছিলাম।
আবার অনেক শিক্ষাও হয়েছে। তখন সারভাইভ করার জন্য আমাকে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছিল।