সংস্কৃতি অঙ্গনে নানা আয়োজনে ভাষা শহীদদের স্মরণ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সংস্কৃতি অঙ্গন ছিল নানা আয়োজনে মুখর। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ছায়ানট, শিল্পকলা একাডেমিতে ছিল গান, কবিতা ও নৃত্যের নানা আয়োজন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2018, 03:38 PM
Updated : 23 Feb 2018, 09:22 AM

রবীন্দ্র সরোবরের উন্মুক্ত মঞ্চে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত একুশের অনুষ্ঠানমালার শেষ দিন ছিল বুধবার।

প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় একুশের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার মর্মবাণীকে সামনে রেখে ১৪ দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে সংগঠনটি।

এদিন সন্ধ্যায় গান, আবৃত্তি, নৃত্য আর পথনাটক মঞ্চায়নের মধ্যদিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

নাটক আর সম্মেলক কণ্ঠে দেশাত্মবোধক গানের মধ্য দিয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে ছায়ানট।

বুধবার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শুরুতে মঞ্চায়ন হয় মুক্তিযুদ্ধের নাটক ‘লাল জমিন’। এতে একক অভিনয় করেন মোমেনা চৌধুরী। মান্নান হীরার রচনায় নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী।

পরে সম্মেলক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে ছায়ানটের শিল্পীরা। কাজী নজরুল ইসলামের ‘ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি’ গানের মধ্যদিয়ে শুরু হয় পরিবেশনা।

শিল্পীরা পরে গেয়ে শোনান মোহিনী চৌধুরীর রচনা ও কৃষ্ণ চন্দ্র দে’র সুরে ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ গানটি।

সবশেষে পরিবেশিত হয় জাতীয় সঙ্গীত। এর আগে সকালে আজিমপুর সেনাক্যাম্পের সামনে প্রভাতফেরি করে ছায়ানট।

ভাষা শহীদদের স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার বিকালে আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠান।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক সফিউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা পর্ব শেষে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

এ পর্বে দলীয় পরিবেশনা উপস্থাপন করে সংগঠনের মিরপুর শাখার শিল্পীরা। এছাড়াও পরিবেশিত হয় একক গান ও আবৃত্তি। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে উদীচীর ভাষা অভিযাত্রা।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিশেষ কবিতা পাঠের আসর বসে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায়।

আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে কেন্দ্রীয় কচি কাঁচার মেলা। সংগঠনের নিজস্ব মিলনায়তনে বুধবার সকালে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেলার শিশু সদস্য ধ্রুব বণিক।

অনুষ্ঠানে হাতের লেখা ও বানান প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন অতিথিরা। সবশেষে পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা ছিল শিল্পকলা একাডেমিতে।

দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরুতে বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দূতাবাসের সদস্যরা।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয় ফিলিপিন্স, ডেনমার্ক, নেপাল, ফ্রান্স, ইরান কালচারাল সেন্টার, ইন্দোনেশিয়া, স্পেন, কোরিয়া, ভারত, জাপান ও বাংলাদেশের শিল্পী ও সংগঠন।

সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিদেশি শিল্পীরা। সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্য দল, ইরান কালচারাল সেন্টার ও ঢাকা সাংস্কৃতিক দল।