হলিউডেও আমার কাজের সুযোগ আছে: প্রিয়তি

সম্প্রতি দেশে ফিরে গ্লিটজের মুখোমুখি হলেন সাবেক ‘মিস আয়ারল্যান্ড’ মডেল-অভিনেত্রী মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2018, 01:21 PM
Updated : 26 Jan 2018, 02:36 PM

ঢাকার মেয়ে প্রিয়তি ১৭ বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন আয়ারল্যান্ডে। ২০১৪ সালে ‘মিস আয়ার‌ল্যান্ড’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসেন।

বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের চলচ্চিত্রে নিয়মিত কাজ করছেন। ‘সুযোগ পেয়েছিলেন’ হলিউডি চলচ্চিত্রেও। অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডেও সক্রিয় তিনি। সম্প্রতি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগ্রহও জানিয়েছেন।

গ্লিটজ: শিশুদের নিয়ে একটি ফাউন্ডেশনের পরিকল্পনা ছিল আপনার। কাজ কতদূর এগিয়েছে?

প্রিয়তি: ফাউন্ডেশনটা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, চলছে পরিকল্পনা। তবে ফাউন্ডেশনের বাইরেও পথশিশুদের নিয়ে নিয়মিত কাজ করেছি, করছি, সামনেও করব।

গ্লিটজ: পথশিশুদের নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা কীভাবে পেলেন?

প্রিয়তি: ছোটবেলায় বাবাকে দেখে শিখেছি। উনি এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এগুলো দেখেই বেড়ে উঠেছি।

তাছাড়া বিউটি পাজেন্টে যুক্ত হওয়ার পর এ ধরনের কাজ করতে হয়। সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টিও আমার মাথায় আছে।

যেহেতু কাজের জন্য আমাদের প্ল্যাটফর্ম আছে, তাহলে কেন সেটাকে কাজে লাগাব না?

গ্লিটজ: বাংলাদেশে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর অনেকেই শিশুদের নিয়ে কাজের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পরে সেভাবে চোখে পড়ার মতো কোনও কাজে দেখা যায় না বিজয়ীদের।

প্রিয়তি:
বাংলাদেশে এটা এখনও সেই ভাবে হচ্ছে না, প্র্যাকটিস হচ্ছে না সম্ভবত। তবে বাইরের দেশে সবাই করে। কারণ আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেভাবেই আমরা প্রশিক্ষিত হই। সঙ্গে মনের দুয়ারটাও খুলে যায়।

গ্লিটজ: আপনার কী মনে হয়, এই ধরনের প্র্যাকটিস দেশে হচ্ছে না কেন? এইসব প্রতিযোগিতা থেকে উঠে আসা দেশীয় তারকারা প্রতিশ্রুতি রাখেন না কেন?

প্রিয়তি: বাংলাদেশের কাউকে নিয়ে কমেন্ট করে বিতর্ক তৈরি করতে চাই না। এটা প্রত্যেকের নিজস্ব মন-মানসিকতার ব্যাপার।

আমি মনে করি, করতে চাইলে সামর্থ অনুযায়ী যে কেউই নিজ নিজ জায়গা থেকে সহায়তা করতে পারেন। যাদের সামর্থ আছে তাদেরকে উৎসাহিত করব।

বিশেষ করে যারা সেলিব্রেটি তারা যদি এগিয়ে আসে তাহলে আরও দশজন সাধারণ মানুষ অনুপ্রাণিত হয়। সেলিব্রেটিদের কাজকর্ম সবসমময় সমাজের সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করে। তবে বাংলাদেশেও কিন্তু অনেক মিডিয়া ব্যক্তিত্ব কাজ করে যাচ্ছেন।

গ্লিটজ: আপনি নাকি রাজনীতিতে যুক্ত হতে চান?

প্রিয়তি: মন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা আছে আমার। এখন একটা প্ল্যাটফর্ম দরকার। প্ল্যাটফর্ম পেলে খুব দ্রুতই হয়ত রাজনীতিকে যুক্ত হব।

তবে একটি বিষয় হল, রাজনীতিতে পরিবারকে যদি প্রাধান্য দেওয়া হয় তাহলে বাইরের কেউ সেভাবে জায়গা পাবে না। নতুনদের আসার সেই সুযোগটা দিতে হবে।

কারণ আমাদের পরিবর্তন দরকার। তা নাহলে আমরা পেছনেই পড়ে থাকব। অথচ পুরো বিশ্বই এগিয়ে যাচ্ছে।

গ্লিটজ: আপনার রাজনৈতিক আদর্শ কী?

প্রিয়তি:
মানুষের জন্য কাজ করা, তা যে উপায়েই হোক না কেন। কথা হচ্ছে, পৃথিবীতে আমাদের দেশই একমাত্র দেশ, যেখানে দলকে তেল মেরে চলে সমর্থকরা। বিশ্বের আর কোথাও তেল মারার ব্যাপারটা দেখিনি।

আমি যে একদম এটার বিরুদ্ধে তা না। যেটা ঠিক সেটাকে ‘হ্যাঁ’ বলব, যেটা ঠিক না সেটাকে ‘না’ বলব। তার জন্য যদি আমার জায়গাটা চলে যায় কিংবা জনপ্রিয়তা কমে যায় সেটা নিয়ে ভাবি না।

গ্লিটজ: বর্তমানে দেশের মূলধারার যে রাজনৈতিক দলগুলি আছে, সেগুলোতে যোগ দেবেন?

প্রিয়তি: আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত একটি দল। আ.লীগের প্রতি আলাদা সফট কর্ণার আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দলের কিছু আদর্শ পরিবর্তন এসেছে, তবে তা সেটা পার্টির জন্য না, মানুষের জন্যই।

গ্লিটজ: আত্মজীবনী লেখার কথা ছিল। কবে প্রকাশ হবে?

প্রিয়তি: একুশে বইমেলায় বের করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু বইটি নিয়ে এখনও পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছি না। যদি আগে ভাগেই  শেষ হয়ে যায় তাহলে এই বইমেলায় প্রকাশ করব। না হলেও তাড়াহুড়া করব না। আমি চাই, শতভাগ সন্তুষ্ট হয়েই কাজ শেষ করব। একুশে বইমেলায় না হলেও পরে কখনও প্রকাশ করব।

গ্লিটজ: আত্মজীবনী লেখার প্রয়োজন কেন অনুভব করলেন?

প্রিয়তি:
ইয়াং জেনারেশনকে অনুপ্রাণিত করার জন্য। তাদের কাছে বার্তা দিতে চাই। তারা করে যাতে মোটিভেটেড হয়।

গ্লিটজ: ‘কুকুলাইন’ নামে আয়ারল্যান্ডের একটি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছিলেন। কতটুকু এগিয়েছে?

প্রিয়তি: আমার পার্ট শেষ হয়েছে তবে মুভির কাজ এখনও শেষ হয়নি।

গ্লিটজ: বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কোনও পরিকল্পনা আছে?

প্রিয়তি: বাংলাদেশি কোনও চলচ্চিত্রের ব্যাপারে কোনও কথা হয়নি। কেউ যদি আমাকে ইউটিলাইজ করার মতো সেরকম কোনও প্রজেক্ট নিয়ে আসে ও কাজটা প্রফেশনাল হয় তাহলে করব।

প্রফেশনাল না হলে আমার জন্য কাজটা করা কঠিন হবে। যেহেতু আমি সিস্টেমেটিভভাবে কাজ করে অভ্যস্ত।

গ্লিটজ: বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছেন, হলিউডে কাজের অফার পেয়েছিলেন ।

প্রিয়তি: ২০১৬ সালের দিকে হলিউডে কাজের অফার পেয়েছিলাম। তবে করিনি। আপাতত ওই দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। তবে হলিউডে আমার কাজের সুযোগ আছে।

যেকোনো ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার জন্য সেখানে থাকতে হয়। স্থায়ীভাবে মুভ করার কোনও ইচ্ছা নাই আপাতত। আমার পুরো জীবনটা পড়ে আছে। এমনও হতে পারে পরবর্তীতে আমি মুভ করতেও পারি। আমার জন্য তো দ্বার খোলা আছেই।

গ্লিটজ: আয়ারল্যান্ডে ফিরছেন কবে?

প্রিয়তি: খুব সম্ভবত শনিবার রাতে।

ছবি: প্রিয়তির ফেইসবুক থেকে নেওয়া।