‘হ্যাঁ’ ও ‘না’-এই দুইয়ের দোলাচলেই দুলছে দু’জনের সংসার।
গত বছরের ২২ নভেম্বর আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজের মাধ্যমে অপুর বাসার ঠিকানায় তালাকনামা পাঠিয়েছেন শাকিব। আইনজীবী জানিয়েছেন, তালাকনামাটি কার্যকর হতে ৯০ দিন সময় লাগবে।
আইনজীবীর ভাষ্যে, “শাকিব খান যদি মনে করেন এটাই তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, তবে ৯০ দিন পর তালাকনামা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়ে যাবে।”
আইনের বেঁধে দেওয়া ৯০ দিনের মধ্যে ৪৫ দিন পেরিয়ে গেলেও বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি শাকিব। শাকিব-অপুর ঘনিষ্ঠ এ প্রযোজক গ্লিটজকে বলেন, “শাকিব যে সিদ্ধান্ত নিয়ে তালাকনামা পাঠিয়েছে সেই সিদ্ধান্তই এখনও বলবৎ আছে।”
চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের আগে এখনও দু’জনের জন্য সংসারের দরজা খোলা আছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিনএসিসি) পারিবারিক আদালতে তাদের দুজনকেই থাকতে বলা হয়েছে।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, তিনবারের মধ্যে তারা যদি সংসারে ফেরার ঐক্যমতে পৌঁছান তাহলে বিষয়টির সমাধান হবে। অন্যথায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচ্ছেদ ঘটবে।
১৫ জানুয়ারি পারিবারিক আদালতে শাকিব খান আদৌ উপস্থিত থাকবেন কিনা-তাও অনিশ্চিত।
একটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এখনও সংসারে ফিরতে মরিয়া অপু। একমাত্র পুত্র আব্রাম খান জয়ের জন্য হলেও তাদের সংসার করাটা জরুরি বলে মনে করেন বগুড়ার এ মেয়ে।
তিনি গ্লিটজকে বলেন, “জয়ের জন্য আমি মৃত্যু মেনে নিতে পারি। জয়ের ভবিষ্যৎ ভেবেই আমি এ ডিভোর্স মানি না।
একটা ব্রোকেন ফ্যামিলির বাচ্চা হয়ে জয় বেড়ে উঠুক, আমি এটা চাই না। বিষয়টি সমাধানের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।”
বিচ্ছেদকে ঘিরে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির পরও শাকিবের প্রতি তার কোনও আক্ষেপ নেই বলে জানালেন অপু।
তার ভাষ্যে, “শাকিবকে এখনও আমি সেই প্রথম দিনের মতোই ভালোবাসি।”
তালাকনামা থেকে উদ্ধৃত করে শাকিবের আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, “বিয়ের সময় ধর্মান্তরিত হয়ে অপু বিশ্বাস শাকিব খানকে বিয়ে করেছিলেন। কথা ছিল তিনি মুসলিম রীতিনীতি মেনে চলবেন ও গৃহিনী হয়ে থাকবেন। কিন্তু অপু বিশ্বাস সে কথা রাখেননি।”
তালাকনামায় শাকিব অভিযোগ তোলেন, পুত্রসন্তান জয়কে বাড়িতে গৃহকর্মীর সঙ্গে তালাবন্ধ রেখে ‘ছেলেবন্ধুকে নিয়ে’ দেশের বাইরে যান অপু।
তবে শাকিবের অভিযোগ উড়িয়ে অপু সে সময় গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তিনি চিকিৎসা করাতে কলকাতায় গিয়েছিলেন।
ছেলে জয়কে কাজের মেয়ের কাছে নয়, বড়বোনের কাছে রেখে গিয়েছিলেন। ছেলেকে ভারতে না নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানিয়েছিলেন, কলকাতার শীতের কারণেই ছেলেকে রেখে গিয়েছিলেন।
গুলশানে শাকিব খানের বাসায় ২০০৮ সালে তাদের বিয়ে হয়। কাজী আসেন শাকিবের বাড়ি গোপালগঞ্জ থেকে। বিয়ের সময় শাকিবের ভাই এবং এক প্রযোজকও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তাদের পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সেসব তারা আড়ালেই রেখেছিলেন।
গত বছর এপ্রিলে সন্তান কোলে টেলিভিশন লাইভে এসে সেই খবর প্রকাশ করলে বিষয়টি নাটকীয়তার জন্ম দেয়। শাকিব খান এ নিয়ে শুরুতে বিভিন্ন রকম কথা বললেও পরে তাদের মধ্যে মিটমাট হয়ে যায়।
তার মাস দুয়েকের ব্যবধানে দু’জনের দূরত্ব বাড়তে থাকে। পুত্র জয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে শাকিব খানের ছবি না থাকা ও অনুষ্ঠানে শাকিবের অনুপস্থিতির কারণে দু’জনের বিচ্ছেদের গুঞ্জন রটে।
তালাকনামা পাঠানোর মধ্য দিয়েই সব গুঞ্জনের পরিসমাপ্তি ঘটে।