‘বারী ভাই মৃত্যু নিয়ে ভীত ছিলেন না’

বারী সিদ্দিকী-শহীদুল্লাহ ফরায়জী জুটির কাছ থেকে পঞ্চাশেরও বেশি হৃদয়গ্রাহী গান পেয়েছে শ্রোতারা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন বারী সিদ্দিকী। প্রিয় বন্ধুকে ঘিরে স্মৃতিচারণ করলেন শহীদুল্লাহ ফরায়াজী।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2017, 11:44 AM
Updated : 24 Nov 2017, 11:44 AM

১৯৯৭ সালের দিকে ‘প্রেমের শরীর’ অ্যালবামে প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করেন তারা। মিক্সড অ্যালবামটিতে বারী সিদ্দিকীর গাওয়া ‘হায়রে আমার সারা দেহ ডুইবা রইলো’ ও ‘তুমি আমার কেমন বন্ধু হলে’ শিরোনামে দুটি গান লিখেন শহীদুল্লাহ ফরায়জী।

সেই থেকেই যাত্রা শুরু হয় এ জুটির। এরপর বারী সিদ্দিকীর একক অ্যালবাম ‘অপরাধী হইলেও আমি তোর’, ‘নিলুয়া বাতাস’, ‘মাটির মালিকানা’, ‘ভাবের দেশে’-এ গান লিখেছেন তিনি।

গ্লিটজের সঙ্গে আলাপচারিতায় শহীদুল্লাহ ফরায়জী বলেন, “মৃত্যু নিয়ে বারী ভাইয়ের সঙ্গে বহুবার কথা হয়েছে। মৃত্যুকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখেছেন তিনি। উনি বলতেন, এটাকে বরণ করতেই হবে, মৃত্যু কোনো বেদনার বিষয়ও না। উনার মানসিকতা ছিল অন্যরকম। উনি তো আর গতানুগতিক মানুষের মতো না। মৃত্যু নিয়ে তিনি ভীত ছিলেন না। উনি যখন অসুস্থ ছিলেন, কাউকে কখনো বলেননি আমি মরে যাচ্ছি।”

বারী সিদ্দিকীর মরদেহ নিয়ে নেত্রকোনায় পৌঁছেছেন তিনি। শুক্রবার বিকেলেই তার লাশ দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মোবাইল ফোনে তিনি আরও বলেন, “আমরা আলাপ করতাম, একসঙ্গে তো মরার সুযোগ নেই, একসঙ্গে তো জানাজার সুযোগ নেই, একসঙ্গে তো মাটি হওয়ারও সুযোগ নেই। একজনকে আগে চলে যেতে হবে। এটা নিয়ে উনার আক্ষেপ ছিল।”

বারী সিদ্দিকীকে ভিন্নধারার গানের প্রবর্তক হিসেবে ‍উল্লেখ করে তিনি জানালেন, তার এ শূন্যতা কখনোই পূরণ হবার নয়। তিনি আরও বলেন, “বারী ভাই ভিন্নমাত্রার, ভিন্ন প্রকৃতির, ভিন্ন মেজাজের একজন শিল্পী। সুতরাং বারী ভাইয়ের শূন্যতা থেকেই যাবে। তিনি ভিন্নধারার সৃষ্টি করে গেছেন। ভিন্নধারা তো সকাল বিকেল সৃষ্টি হয় না।”

লোকগান ও আধ্যাত্মিক ধারার গানের জন্য পরিচিত এই শিল্পী গত শতকের শেষ দিকে সারা দেশের শ্রোতাদের কাছে পৌঁছান কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে। চলচ্চিত্রের প্লেব্যাকে তার দরদী কণ্ঠের বেশ কিছু আবেগমাখা গান দারুণ জনপ্রিয়।

শুক্রবার সকালে বারী সিদ্দিকীর মরদেহ নেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখানে ভক্ত আর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীরা তার জানাজায় অংশ নেন।

এরপর তার কফিন নেওয়া হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রাঙ্গণে। সেখানে আরেক দফা জানাজার পর মরদেহ নেত্রকোণায় নেওয়া হয়।