বারী সিদ্দিকীর শারীরিক অবস্থার অবনতি

রোববার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে সংগীতশিল্পী বারী সিদ্দিকীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তার পুত্র সাব্বির সিদ্দিকী।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2017, 11:03 AM
Updated : 19 Nov 2017, 11:03 AM

রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে গ্লিটজকে তিনি বলেন, “আস্তে আস্তে বাবার শারীরিক অবস্থা চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে। ডাক্তারদের সঙ্গে সকালে কথা হয়েছে। উনারা বলছেন, এখন দোয়া করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। বাবার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইছি।”

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রাতে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। শারীরিক অবস্থা গুরুতর বিবেচনায় সঙ্গে সঙ্গেই আইসিইউতে নেওয়া হয়। বর্তমানে কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক আবদুল ওয়াহাবের তত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

চিকিৎসক জানিয়েছেন, হৃদরোগ ছাড়াও কিডনির জটিলতায় ভুগছেন তিনি।

এ সংগীতশিল্পী ১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান সংগীত শিল্পী, গীতিকার ও বাঁশিবাদক। মূলতঃ গ্রামীণ লোকসংগীত ও আধ্যাত্মিক ধারার গান করে থাকেন তিনি।

শৈশবে পরিবারের কাছে গান শেখায় হাতেখড়ি হয় তার। মাত্র ১২ বছর বয়সেই নেত্রকোনার শিল্পী ওস্তাদ গোপাল দত্তের অধীনে তার আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। তিনি ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, পান্নালাল ঘোষ সহ অসংখ্য গুণীশিল্পীর সরাসরি সান্নিধ্য লাভ করেন।

ওস্তাদ আমিনুর রহমান একটি কনসার্টের সময় বারি সিদ্দিকীকে অবলোকন করেন এবং তাকে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেন। পরবর্তী ছয় বছর ধরে তিনি ওস্তাদ আমিনুর রহমানের অধীনে প্রশিক্ষণ নেন। সত্তরের দশকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাথে যুক্ত হন। ওস্তাদ গোপাল দত্তের পরামর্শে ক্লাসিক্যাল মিউজিক এরপর পড়াশোনা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে বাঁশির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন ও বাঁশির ওপর উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেন। নব্বইয়ের দশকে ভারতের পুনে গিয়ে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছে তালিম নেন। দেশে ফিরে এসে লোকগীতির সাথে ক্লাসিক মিউজিকের সম্মিলনে গান গাওয়া শুরু করেন।

কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে নব্বইয়ের দশকে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছান এ শিল্পী। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে বারী সিদ্দিকী এই ‍নির্মাতার ‘রঙের বাড়ই’ নামের একটা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে জনসমক্ষে প্রথম সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ূন আহমেদের রচনা ও পরিচালনায় নির্মিত “শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে ৭টি গানে কণ্ঠ দেন। এর মধ্যে ‘শুয়া চান পাখি’ গানটির জন্য তিনি অতিদ্রুত ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব বাঁশি সম্মেলনে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেন তিনি। একক গানের পাশাপাশি বারী সিদ্দিকী বেশকিছু চলচ্চিত্রেও কণ্ঠ দিয়েছেন।