স্টেডিয়াম মেলেনি, বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব এবার হচ্ছে না

ঢাকার আর্মি স্টেডিয়াম বরাদ্দ না পাওয়ায় এবার উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব আয়োজন না করার ঘোষণা দিয়েছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2017, 07:20 AM
Updated : 22 Oct 2017, 07:20 AM

রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু বলেন, ‘বিদেশি শিল্পীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে’ তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আসছে ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর ঢাকায় বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের ষষ্ঠ আসর বসার কথা ছিল। এর আগের পাঁচটি আসর এই আর্মি স্টেডিয়ামেই হয়েছিল।

ঢাকার সংগীতপ্রেমীদের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মী এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে সেসব অনুষ্ঠান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পাশাপাশি সরকারের মন্ত্রীদেরও রাত জেগে স্টেডিয়ামে বসে ভারতীয় উপমহাদেশের নামকরা ধ্রুপদ শিল্পীদের পরিবেশনা উপভোগ করতে দেখা যায়।    

বেঙ্গল চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এবার উৎসবের প্রস্তুতি শুরু করার পর তারা আর্মি স্টেডিয়াম ব্যবহারের জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ড গত ৩১ অগাস্ট এক চিঠিতে জানায়, ওই সময় পোপের বাংলাদেশ সফরের সূচি থাকায় আর্মি স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয়।

রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের ঢাকায় আসার কথা ৩০ নভেম্বর। যেহেতু তার সফরের প্রধান অনুষ্ঠানটি আর্মি স্টেডিয়ামে হচ্ছে না, সেহেতু ৯ সেপ্টেম্বর সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডকে আবারও চিঠি দিয়ে স্টেডিয়াম বরাদ্দের অনুরোধ করেছিল বেঙ্গল। কিন্তু দ্বিতীয়বারেও একই জবাব আসে বলে জানান আবুল খায়ের লিটু।

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক মানের এ উৎসবের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা সারতেই আট মাস সময় লাগে। নিবিড়ভাবে সব দিক সমন্বয়ের পর পরিকল্পনা পরিবর্তন বা সংকোচন সম্ভব হয় না।

“উৎসবের পাঁচ বছরের যে চরিত্র দাঁড়িয়েছে, পরিবর্তন করলে তা বিপন্ন হবে। এ কারণে স্থান পরিবর্তন, তারিখ বা সময় পরিবর্তন কিংবা অনুষ্ঠান সংকোচন অথবা শিল্পী পরিবর্তন- এর কোনোটাই এ পর্যায়ে সমীচীন হবে না।”

তিনি বলেন, “বিদেশি শিল্পীদের কাছে আর্মি স্টেডিয়াম নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বিকল্প ভেন্যু বিবেচনার কোনো অবকাশ নেই।”

বেঙ্গল চেয়ারম্যান বলেন, এবারের উৎসবের জন্য অগাস্ট মাসের মধ্যেই ভারতের প্রথম সারির উচ্চাঙ্গসংগীত শিল্পী, বাংলাদেশের নবীন ও প্রবীণ শিল্পী এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে অনু্ষ্ঠানের পরিকল্পনা ও যাত্রার তারিখ নির্ধারণসহ সব ব্যবস্থা তারা চূড়ান্ত করেন।

কিন্তু স্থান নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় কাজ এগিয়ে রাখার স্বার্থে বিকল্প স্থান চিহ্নিত করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে বিদেশি  শিল্পীদের অংশগ্রহণের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তারা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে নির্ধারিত করও জমা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই বিকল্প স্থানেও সারা রাত অনুষ্ঠান করার অনুমতি মেলেনি বলে জানান আবুল খায়ের।

অন্যদের মধ্যে এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী এবং কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।