অভিনয় ছাড়ছেন কেন মিশা?

ঢাকাই চলচ্চিত্রের দর্শকদের জন্য রোববারের অন্যতম খবর ছিল অভিনেতা মিশা সওদাগরের হঠাৎ অবসরের সিদ্ধান্ত। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্তে এলেন তিনি, সে খবর জানতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতির মুখোমুখি হয় গ্লিটজ।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Sept 2017, 02:52 PM
Updated : 10 Sept 2017, 03:47 PM

৫১ বছর বয়সী এই অভিনেতা শুরুতে শুধু এটুকুই বললেন, “কারণটা ব্যক্তিগত।”

কিন্তু কী সেই ব্যক্তিগত কারণ?

খোলাসা করলেন মিশা, “শুটিং করতে গিয়ে আমার লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে। চিকিৎসা করাতে হবে। আমার বড় ছেলে আমেরিকায় চলে গেছে। ছোট ছেলে আর স্ত্রীকে নিয়ে দেশে আছি আমরা। পরিবারকে সময় দিতে হবে। পরিবার আমাকে অভিনয়ের জন্য যথেষ্ট সাপোর্ট করেছে। আমার কাছ থেকে পরিবারেরও তো কিছু চাওয়া থাকতে পারে।”

ত্রিশ বছর ধরে অভিনয় করছেন। কাজ করেছেন আটশ’রও বেশি চলচ্চিত্রে। দেশজুড়ে আছে লাখো ভক্ত। তিন দশকের স্মৃতিময় লাইট, ক্যামেরার জগৎটাকে এতটা সহজেই ভুলে থাকতে পারবেন?

মিশার স্বীকারোক্তি, “এটি আমার জন্য অনেক কঠিন পরীক্ষা-সেটা আমি জানি। কিন্তু আমি যা-ই করি না কেন দেশের মানুষ আমার পাশে থাকবে। কখনো কোনো কিছু করিনি যা আমাকে ও পরিবারকে ছোট করবে, দেশকে ছোট করবে। আমি যে চ্যালেঞ্জই নেই না কেন, দেশ আমার পাশে থাকবে।”

মিশার এই সিদ্ধান্তে বেশ বড় হোঁচট খেয়েছেন ভক্তরা। সেকারণে ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এই অভিনেতা।

তাদের উদ্দেশ্যে বললেন, “ভক্তদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা আছে সবসময়। তারা এমন একজন লোকের ভক্ত ছিল, যার জীবনে কোনো স্ক্যান্ডাল নেই। তারা শুধু আমার অভিনয় জীবনটাকেই ফলো করে না, ব্যক্তিজীবনটাকেও ফলো করে। আমার সামাজিক জীবনটাকে সম্মান করে। আমরা তো আর আট-দশটা শিল্পীর মতো জীবনযাপন করি না যে, পরিচয় দেওয়া যায় না বাবা-মা’র সামনে। প্রিয় ভক্তদের মিস করব।”

তিনি আরও বলেন, “আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। আবার দেখা গেল, নতুন কোনো কাজে জিরো থেকে আরম্ভ করব। পাশে থাকবেন আপনারা।”

চলতি বছরের শুরু থেকেই যৌথ প্রযোজনা নিয়ে সোচ্চার ছিলেন মিশা। চলচ্চিত্রের সংকট কেটে গেছে বলে দাবি করলেন তিনি।

বললেন, “সিনেমার তো সবকিছুই ঠিক করে দিলাম। শাকিবের ঝামেলা ঠিক করে দিলাম। যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ঠিক করে দিলাম। যে ভিশনকে সামনে রেখে কাজ করেছি সেটা করেছি। এখন বাকিরা কাজ করতে থাকুক।”

সিনেমা নিয়ে কোনো অভিমান জমেছে কি মনে?

“নাহ! কারো প্রতি কোনো অভিমান নেই।”

অভিনয় ছাড়লেও শিল্পী সমিতি ছাড়ছেন না। সভাপতির পদে থেকে শিল্পীদের উন্নয়নেই কাজ চালিয়ে যেতে চান তিনি।

বাংলা চলচ্চিত্রে তার অভিষেক হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। শুরুতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করলেও পরবর্তীতে খলচরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পেয়েছেন তিনি।