নায়করাজের নায়িকারা

তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ্জাক। পঞ্চাশ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকাদের সঙ্গেই জুটি বেঁধে হাজির হয়েছেন বড়পর্দায় তিনি। রোমান্টিক ‍সিনেমায় নায়িকাদের সঙ্গে রাজ্জাকের প্রেমপর্ব এতোটাই প্রাণবন্ত ছিল যে, দর্শকরা নায়িকাদের বাস্তবজীবনেরও প্রেমিকা ভাবতেন! এ নিয়ে অম্ল-মধুর ঘটনারও অবতারণা হয়েছে অনেকবার। তাঁর সঙ্গে রূপালিপর্দার জনপ্রিয় নায়িকাদের নিয়েই এই আয়োজন

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2017, 12:48 PM
Updated : 23 August 2017, 12:48 PM

সুচন্দা

নায়করাজের প্রথম নায়িকা সুচন্দা। তাঁর বিপরীতে ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিল নায়করাজের। তবে এর আগে বেশ ক’টি চলচ্চিত্রে এক্সট্রা শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন রাজ্জাক। ছবিটি দর্শকমহলে দারুণ সাড়া ফেলে। পরিচালকরাও জুটিটি নিয়ে দারুণ আগ্রহী হয়ে উঠে। এরপর জুটি বেঁধে আরো বেশ ক’টি সিনেমায় দেখা গেছে তাদের। ষাটের দশক পুরোটাই শাসন করেছেন তারা। তাদের আলোচিত সিনেমাগুলো- ‘আনোয়ারা’, ‘জুলেখা’, ‘দুই ভাই’, ‘সংসার’, ‘সুয়োরানী দুয়োরানী’, ‘মনের মত বউ’, ‘জীবন থেকে নেয়া’সহ অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তারা।

 

কবরী

বাংলা চলচ্চিত্রের জুটি প্রথায় আলোড়ন তুলেছিল রাজ্জাক-কবরী জুটি। তাঁদের জুটিটা এতোটাই প্রাণবন্ত ছিল যে, দর্শকরা দু’জনকে সত্যিকারের প্রেমিক-প্রেমিকা ভেবে নিত! জুটিটি তখনকার তরুণ-তরুণীদের কাছে ছিল আইডল। ছেলেরা নিজেদের রাজ্জাক আর মেয়েরা কবরী বলে কল্পনা করতেন। বিষয়টি নিয়ে কবরী তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’এ লিখেছেন, “সিনেমামোদী যারা এসব সিনেমা দেখেছেন তারাও হয়ে যেতেন রাজ্জাক আর অপরপক্ষ নিজেকে ভাবত কবরী, তাই না?”

সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘আবির্ভাব’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে এ জুটির। ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘ঢেউ এর পরে ঢেউ’ এবং স্বাধীনতার পর ‘রংবাজ’, ‘বেঈমান’সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্র উপহার দেন এই জুটি। রাজ্জাকের মৃত্যুর পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্বাসই হচ্ছে না, তিনি আমাদের মাঝে নেই। খুবই কষ্ট হচ্ছে আমার। এতদিন ধরে কাজ করছি, বিশ্বাসই হচ্ছে না।

 

ববিতা

রাজ্জাক-সুচন্দা জুটির ‘সংসার’ সিনেমায় রাজ্জাকের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ববিতা! তবে তাঁর বিপরীতে নায়িকা হিসেবে জুটি বাঁধেন ‘টাকা আনা পাই’ চলচ্চিত্রে। জুটির ‘অনন্ত প্রেম’ ছবিটি বাংলা চলচ্চিত্রে অন্যতম সফল সিনেমাগুলোর একটি। এছাড়াও ‘পিচ ঢালা পথ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘বাঁদী থেকে বেগম’সহ অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন তারা।

নায়করাজের মৃত্যুর পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, “বিশ্বাসই করতে পারছি না! সাতদিন আগেই উনার সঙ্গে কথা হলো। বললেন, আমি তো থাইল্যান্ড থেকে ঘুরে এলাম। উনি যে অসুস্থ এটা একবারও মনে হয়নি আমার। বরং হেসে হেসে আমার সঙ্গে অনেক কথা বলেছেন।”

 

শাবানা

‘মধু মিলন’ সিনেমার মধ্য দিয়ে জুটির যাত্রা শুরু হয়। এরপর ‘অবুঝ মন’ সিনেমাটি দর্শক মহলে আলোড়ন তোলে। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজ্জাকের পরিচালনায় ‘চাঁপা ডাঙার বউ’ সিনেমাতেও ছিলেন শাবানা। জুটির উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে ‘অমর প্রেম’, ‘মাটির ঘর’, ‘সখী তুমি কার’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘রজনীগন্ধা’ ইত্যাদি।

 

শবনম

‘নাচের পুতুল’ সিনেমার মধ্য দিয়ে এই জুটি যাত্রা শুরু করে। ছবিটিতে মাহমুদুন্নবীর গাওয়া বিখ্যাত গান ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন, কপালের কালো টিপ পড়বে চোখে’-এর সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন তারা। পরবর্তীতে ‘আখেরী স্টেশন’, ‘চোর’ সিনেমাতেও একসঙ্গে দেখা গেছে তাদের।