রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে প্রিয়াঙ্কার সিনেমায় চুমুর দৃশ্য বাদ

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম জীবনের প্রেম নিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া প্রযোজিত সিনেমাটি থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আপত্তিতে বাদ পড়ছে একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্য।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2017, 02:37 PM
Updated : 11 July 2017, 02:41 PM

ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা উজ্জ্বল চ্যাটার্জী তৈরি করছেন কৃষ্ণ কৃপালনির ‘টেগোর : আ লাইফ’ বই অবলম্বনে এই চলচ্চিত্রটি। এতে উঠে আসবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কিশোর বয়সের দিনগুলির কথা, যখন তিনি ইংরেজি শিখতে হাজির হয়েছিলেন তার ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বন্ধু ও মুম্বাই-এর চিকিৎসক আত্মারাম পাণ্ডুরঙের বাড়িতে।

সেখানে তাকে ইংরেজি আদবকেতার শিক্ষা দিতেন আত্মারামের কন্যা অন্নপূর্ণা, যিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের চেয়ে ২-৩ বছরের বড়। অন্নপূর্ণা বা আনার সঙ্গে সেসময় কিশোর রবির গড়ে উঠেছিল এক নির্মল প্রেমের সম্পর্ক। রবীন্দ্রনাথ আনার নাম দিয়েছিলেন ‘নলীনি’। তার প্রথম দিকের অনেক প্রেমের কবিতা এই নলীনিকে উদ্দেশ্য করেই লেখা।

নলীনিও সাড়া দিয়েছিলেন কবিগুরুর প্রেমে। শোনা যায়, তিনি বলতেন রবীন্দ্রনাথের গান তাকে মৃত্যুশয্যা থেকেও ফেরত আনতে পারে। কিন্তু তাদের সেই প্রেম স্থায়ী হয়নি বেশিদিন। ৩৩ বছর বয়সে অন্নপূর্ণা ঠাকুরের অকালমৃত্যু হয়।

অন্নপূর্ণা

কবিগুরুর এই প্রেমকে পর্দায় তুলে আনতে যখন তৎপর প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার পার্পল পেবলস পিকচার্স, ঠিক তখনই ছবিটির মাধ্যমে যেন নোবেলজয়ী প্রথম বাঙালির ভাবমূর্তিতে কোনো কালি না পড়ে, সেব্যাপারে দারুণ সতর্ক বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি তারা গঠন করেছে সিনেমাটিতে কোনো অসংলগ্নতা আছে কিনা, তা নীরিক্ষণের জন্য।

এই কমিটির আতশ কাঁচে ধরা পড়েছে ছবিটির দুটি অন্তরঙ্গ দৃশ্য। একটিতে নলীনিকে চুমু খাচ্ছেন তার বাগদত্ত, আর রবিঠাকুর তা চেয়ে দেখছেন। আরেকটি, নলীনি নিজেই রবীন্দ্রনাথের গালে এঁকে দিয়েছে আলতো চুমুর ছোঁয়া।

প্রথমটি নিয়ে আপত্তি নেই বিশ্বভারতীর, কারণ এই ঘটনা রবীন্দ্রনাথ নিজেই লিখে রেখে গেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় ঘটনাটির অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান থাকায় নির্মাতাদের দৃশ্যটি বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়টি। নির্মাতারাও বেশি ঝামেলায় না গিয়ে মেনে নিয়েছেন বিশ্বভারতীর দাবি।

বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সন্দীপ কুমার ভট্টাচার্য বলেছেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় সিনেমাটির চিত্রনাট্য তারা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন। এক্ষেত্রে একচুল পরিমান ভুলেরও কোনো অবকাশ নেই বলে জানান তিনি।