গ্লিটজ: টালিগঞ্জে নিজের অবস্থান তেমন শক্ত হতে না হতেই হঠাৎ করে যৌথ প্রযোজনার সিনেমার দিকে আপনি ঝুঁকলেন কেন?
ঋত্বিকা সেন: যেহেতু আমরা বাঙালি সেহেতু বাংলাদেশের প্রতি আমার সবসময় একটি টান রয়েছে। ইন্দো-বাংলা একটি প্রজেক্টে কাজ করার ইচ্ছে আমার মনে বহুদিন ধরেই ছিলো। তাছাড়া অনেক দিন ধরেই এমন একটি সিনেমায় কাজ করতেও আমি চাইছিলাম। যখন এই সিনেমায় কাজের প্রস্তাব আমার কাছে এসেছে তখন আমার খুবই ভালো লেগেছে। বলতে গেলে ব্যাটেবলে সব মিলে গেলো, তাই।
গ্লিটজ: ‘গাদ্দার’ সিনেমাটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টিকে আপনি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছিলেন?
ঋত্বিকা সেন: সিনেমার গল্পটা প্রথমবার শোনার পরেই আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। গল্পটা খুবই ইউনিক। এখনকার সময়ের সিনেমাগুলোতে আমরা যেসব গল্প দেখছি এই সিনেমার গল্পটি একেবারেই আলাদা। তাছাড়া এই ‘গাদ্দার’ সিনেমার গল্পের মধ্যে একটা অন্যরকম টান রয়েছে। যা আমাকে খুবই আকর্ষণ করেছে।
গ্লিটজ: বাংলাদেশের গণমাধ্যম থেকে সাড়া মিলছে কেমন?
ঋত্বিকা সেন: বাংলাদেশের সংস্কৃতিও আমি খুবই ভালোবাসি। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে দর্শকের ভালোবাসা। সেই দর্শকের ভালোবাসা এবং সমর্থনের প্রায় ষাটভাগই আমি এখান (বাংলাদেশ) থেকে পেয়েছি। গনমাধ্যমের কাছ থেকে আমি যেমন ধরনের সাড়া পাচ্ছি তার জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ।
ঋত্বিকা সেন: ছোটবেলা থেকে অভিনয় করলেও আমি খুব বেশি কাজ করিনি। যেমনটি এখনও নয়। আমি সবসময় গল্পের উপর প্রাধান্য দিয়ে একটু যাচাইবাছাই করেই অভিনয় করেছি। আমি যখন বড়পর্দায় লিড হিরোইন হিসেবে এসেছি তখনও দর্শকদের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। তাই আমি কোন ধরনের ইমেজ কাটাতে চাই না। দর্শকরা আমাকে যেভাবে গ্রহণ করেছে সেজন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ। সিনেমার ক্ষেত্রে ‘বরবাদ’ কিংবা ‘আরশিনগর’ সিনেমার হিরোইন হিসেবেই নয় বরং টেলিভিশনের ‘বউ কথা কও’ কিংবা ‘চ্যালেঞ্জ-২’, ‘হানড্রেড পারসেন্ট লাভ’ ইত্যাদি সিনেমার কাজগুলোতেও আমাকে দর্শকরা গ্রহণ করেছেন। যখন আমি তাদের মুখে এই নামগুলো শুনতে পাই তখনই অনুভব করতে পারি দর্শকরা সেগুলোর কথা মনে রেখেছেন।
গ্লিটজ: বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দুই সিনেমা শিল্পের সঙ্গেই আপনি কাজ করছেন। কাজের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোতে পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন?
ঋত্বিকা সেন: কিছুটা পার্থক্য তো অবশ্যই রয়েছে। এদেশের মানুষ আমাদের তুলনায় অনেক বেশি আন্তরিক। কাজের ক্ষেত্রে সেই পার্থক্যটা কাজ শুরু থেকেই অনুভব করছি। ঢাকায় আসার পরে আমাকে অভ্যর্থনা থেকে শুরু করে শুটিংয়ে কাজ করা পর্যন্ত সবজায়গাতেই যথেষ্ট আন্তরিকতার ছোঁয়া রয়েছে। যা আমি খুবই উপভোগ করছি।
গ্লিটজ: শুনেছি সিনেমায় সহশিল্পী শ্রাবণের সঙ্গে ইতমধ্যে রসায়ণ বেশ জমে উঠেছে?
ঋত্বিকা সেন: শ্রাবণ খুবই সুইট। যদিও ওর উপর ক্রাশ খাওয়া হয়নি। কেননা সুইট হলেই কি ক্রাশ খেতে হয়? রসগোল্লাও তো সুইট, তাই না? তবে সত্যি বলতে শ্রাবণ খুবই ভালো বন্ধু। আমাদের মধ্যে খুবই মধুর একটি বন্ধুত্বের সর্ম্পক রয়েছে। তাই আমরা যখন শুটিংয়ের ফ্লোরে থাকি তখন খুবই মজা করি।
ঋত্বিকা সেন: এমন কোনো ব্যাপার রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। হয়ত এক বছরে তিনজন টালিগঞ্জের বাইরের শিল্পী টালিগঞ্জের সিনেমায় অভিনয় করলেন আর সবাই এমন কিছু ভেবে নিলো। আমার মনে হয় শিল্পীরা সিনেমার এমন কমার্শিয়াল বা অফবিট এই দিকগুলোতে কখনোই মনোযোগ দেয় না। সিনেমার গল্প যদি ইউনিক হয় তাহলে কমার্শিয়াল সিনেমাতেও তারা কাজ করতে পারেন। এটা আসলে টেকনিক্যালি অনেক সময় হয়ে যায়। বরং আমরা অভিনয় শিল্পীরা সব সময় সিনেমার গল্প কেমন, সেখানে নিজেদের অভিনয়ের জায়গাটা কেমন সেই বিষয়ের উপর বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি।
গ্লিটজ: ‘বরবাদ’ সিনেমায় আপনার অভিনীত ‘চুম্বন’ দৃশ্যের প্রতিক্রিয়া আপনার ভক্তদের কাছ থেকে কেমন মিলেছিলো?
ঋত্বিকা সেন: প্রথমত ‘বরবাদ’ সিনেমায় বনিকে চুম্বনের দৃশ্যটা খুবই উপভোগ করেছিলাম। গঙ্গার ধারে দৃশ্যটার শুটিং হয়েছিলো। দৃশ্যটার পরে বনিকে সেখানে ফেলেও দিয়েছিলাম। পরে ওকে ঘাটে তোলা হয়েছিলো। তাই সেই দৃশ্যটা আমি জীবনে কখনোই ভুলবো না। তবে হ্যাঁ, চারিদিক থেকে অনেক বেশি ইতিবাচক সাড়াই মিলেছে।
‘বরবাদ’ সিনেমার কোনো কিছু নিয়েই কোনো ধরনের নেতিবাচক সাড়া পাইনি। বরং সিনেমার ‘পারবো না আমি ছাড়তে তোকে’ গানটির জন্যও বেশ সাড়া পেয়েছি। সবাই আমাকে প্রশ্ন করতো কোনটা আমার পছন্দের দৃশ্য? কোনটি? কিসিং সিন? নাকি বাইকের পিছনে বসার দৃশ্যটা? এটা আমি খুবই উপভোগ করেছি।
গ্লিটজ: কোন দৃশ্যটা ভুলবেন না চুম্বনের দৃশ্য নাকি বনিকে ফেলে দেওয়ার দৃশ্য?
ঋত্বিকা সেন: ওকে (বনি) ফেলে দেওয়ার জন্য। কিসিং শটটা আসলে কিছুই ছিলো না। ওটা এডিটিং করেই করা হয়েছিলো। চুমুটা আসলে সত্যিকারের ছিলোই না। সেই দৃশ্যটা খুব ভালো করে জুম করে দেখলেই বোঝা যাবে সেটা এডিট করে করা হয়েছে। পুরোটাই ছিলো ছায়া ও এডিট করা।
গ্লিটজ: এ সময়ের ব্যস্ততা?
ঋত্বিকা সেন: বতর্মানে ‘গাদ্দার’ নিয়েই পুরো ব্যস্ত সময় কাটছে। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে খুব শীঘ্রই টালিগঞ্জের দুটো সিনেমার কাজ করবো। সেই বিষয়ে এখুনি কিছু বলতে চাইছি না।