‘সিনেমাওয়ালা’: বিলুপ্তির পথে প্রেক্ষাগৃহের শ্রদ্ধার্ঘ্য

বিশ্ব জুড়ে বিলুপ্তির পথে একক পর্দার প্রেক্ষাগৃহ। সেখানে স্থান করে নিচ্ছে মাল্টিপ্লেক্স। একই সঙ্গে ভিডিও ক্যামেরার উন্নয়নের ধারায় ফুরিয়ে গেছে সেলুলয়েডের আবেদন। কিন্তু যাদের সামর্থ্য নেই কিংবা পুরনোকে আকড়ে ধরে বেঁচে থাকতে চায় যারা, তাদের কি হবে? এই প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, তার‘সিনেমাওয়ালা’র মাধ্যমে।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2016, 08:08 AM
Updated : 6 May 2016, 08:08 AM

প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়াকে কৌশিক বলেন, “অতীত হওয়ার পথে সেলুলয়েডে ধারণ করা সিনেমার প্রতি আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য ‘সিনেমাওয়ালা’। এটা আমার বেড়ে ওঠা সময়ের স্মৃতি জগতের প্রতি বিদায় সংবর্ধনা; যে সময় সেলুলয়েড ফিতায় বন্দী সিনেমার মাধ্যমে আমি এবং আমার প্রজন্ম উদ্ধুদ্ধ হয়েছি, আর যে একক পর্দার প্রেক্ষাগৃহগুলোতে আমার স্বপ্নগুলো ডানা খুঁজে পেয়েছে।”

ছোট্ট এক শহরের সিনেমা প্রদর্শক প্রণবেন্দু দাসকে ঘিরে ‘সিনেমাওয়ালা’র কাহিনি গড়ে উঠেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির অগ্রগতিতে যিনি তার সেলুলয়েড প্রজেকশনের সেকেলে প্রযুক্তির প্রেক্ষাগৃহ ‘কমলিনি’ চালু রাখতে মরিয়া।

১৩ মে মুক্তি পেতে যাওয়া সিনেমাটি নব্বই দশকে মফস্বলের প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা প্রদর্শনের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। সেই সিলিং ফ্যানের ঘরঘর শব্দে সংলাপের অংশবিশেষের ডুবে যাওয়া, যা মাল্টিপ্লেক্সের ক্ষেত্রে হয়ই না, কৌশিক ব্যাখ্যা করেন আরও।

৪৬ তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া আয়োজনে ইউনেস্কো ফেলিনি অ্যাওয়ার্ড জয়ী সিনেমাটি নিউ ইর্য়ক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ২০১৬, চেন্নাই ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, পুনে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল,আইএফএফ দিল্লি, আইএফএফ কেরালা, বেঙ্গালুরু ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নির্বাচিত হয়েছে।

একই পরিচালকের ‘অপুর পাঁচালি’ অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন প্রণবেন্দু দাসের ছেলের ভূমিকায়। তিনি জানান, সিনেমাটি তাকে মুগ্ধ করেছে।

প্রণবেন্দু দাসের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা পরান বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যদি এমন হয় মাল্টিপ্লেক্সে শহর ছেয়ে গেছে, শহরতলীতে তবু রাজত্ব করবে একক পর্দার প্রেক্ষাগৃহ। গ্রাম ও শহরতলীর জনসাধারণ একক পর্দার প্রেক্ষাগৃহে বসে প্রিয় সিনেমা দেখার জন্য এখনও ঘাম ঝরাচ্ছে, যদিও সেই সংখ্যা পড়তির দিকে।”

প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এখন বেশ ভুগতে হচ্ছে টালিগঞ্জকে। তাদের প্রতিযোগিতা করতে হয় হলিউড,বলিউডের মতো ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে।

 

অবস্থা দেখে ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই উদ্বিগ্ন। উত্তরণের পথ খুলতে ধরণা দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দরবারেও।

সেপ্টম্বর মাসের সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বন্ধ সিনেমা হল চালু এবং আরও মাল্টিপ্লেক্স তৈরির আবেদন জানিয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের একটি দল।

সে সময় গৌতম ঘোষ জানান, বাংলায় ১১০০ থেকে বন্ধ হতে হতে এখন চালু আছে ৪০০টি।