পপির আক্ষেপ

এক সময় গল্প, চরিত্র কিংবা পরিচালক-প্রযোজকের বিষয়টিতে খুব একটা আমল না করেই কাজ করে গেছেন অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি। দেড় শতাধিক ঢাকাই সিনেমার এই অভিনেত্রী এখন বলছেন, অনেক সিনেমাতে তাকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়নি।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2015, 06:54 AM
Updated : 10 August 2015, 06:54 AM

সম্প্রতি গ্লিটজের সঙ্গে এক আড্ডায় তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী বললেন, “আমার মনে হয়, চলচ্চিত্রকে আরও অনেক বেশি কিছু দেওয়ার ছিল আমার। কিন্তু আমি পারিনি। আমাদের চলচ্চিত্রশিল্প সম্পূর্নভাবে পরিচালক নির্ভর মিডিয়া। আমার অনেক সিনেমাতেই পরিচালকরা আমাকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি।”

নিজের দায়ও অকপটেই স্বীকার করলেন। 

“আমারও দায় আছে, আমিও না বুঝে সিনেমা সাইন করে ফেলেছিলাম। কে পরিচালক-প্রযোজক, গল্প আর চরিত্রই বা কেমন তা না বুঝেই অনেক সিনেমাতে আমি অভিনয় করে ফেলেছি। যা আমার ক্যারিয়ারের জন্য মোটেই ভালো কিছু হয়নি।”

হালের বাংলা সিনেমা নিয়েও অভিযোগ আছে এই অভিনেত্রীর।

“আগে গল্প, কাহিনিতে সত্যি ভিন্নতা ছিল। বিশেষ কাউকে ভেবে গল্প লেখা হতো না। পরিচালকরাই নায়ক, নায়িকাকে নিয়ে সেই কাহিনিকে নতুন মোড় দিতেন। অ্যাকশন, রোমান্টিক যে ধারারই হোক না কেন, দর্শক কিন্তু ভিন্নতার স্বাদ পেত। এখন আর আগের মতো গল্প তৈরি হয় না। সেই পরিচালকরাও এখন আর সিনেমা নির্মাণ করছেন না। পারিবারিক-সামাজিক ছবি নির্মাণের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে।”

বললেন, এখন থেকে বস্তুনিষ্ঠ চরিত্রে অভিনয় করতে চান, “তাদের কাছে সিনেমার নায়িকা মানেই দু-তিনটি রোমান্টিক গান, রোমান্টিক সিকোয়েন্সে গ্ল্যামারাস উপস্থিতি। এমন সিনেমা অনেক করেছি, আর না। আমি এখন অভিনয়নির্ভর, নারীপ্রধান গল্পে অভিনয় করতে চাই। আমি চাই চ্যালেঞ্জিং চরিত্র।”

আরও বললেন, ঢাকাই সিনেমার এখনও বহু দূর যেতে হবে, “আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কারিগরি লোকজনের বড় অভাব। এতদিনে আমাদের চলচ্চিত্রে যে ধরণের কারিগরি সুবিধা থাকার কথা ছিল, তা হয়নি। একজন নায়ক বা নায়িকা যখন পরিপূর্ণ অভিনেতা-অভিনেত্রী হয়ে উঠেন, তখন তাকে পর্দায় যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয় না। নতুন কারও সিনেমা মুক্তির আগে যে ধরনের প্রচার-প্রচারণা দরকার, তাও হয় না। নতুনরা তাহলে দাঁড়াবে কিভাবে?”

পপি এখন অভিনয় করছেন ‘সোনাবন্ধু’ চলচ্চিত্রে। সিনেমায় পপিকে দেখা যাবে এক গায়েন কন্যার চরিত্রে। তার হাতে রয়েছে ‘শর্টকার্টে বড়লোক’, ‘পৌষ মাসের পিরিতি’. ‘জীবন যন্ত্রণা’, ‘মন খুঁজে বন্ধন’, ‘দুই ভাইয়ের যুদ্ধ’সহ বেশ কটি সিনেমা।

১৯৯৭ সালে মনতাজুর রহমান আকবরের ‘কুলি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিষিক্ত হওয়া সাদিকা পারভিন পপি ২০০৩ সালে ‘কারাগার’, ২০০৮ সালে ‘মেঘের কোলে রোদ’, ২০০৯ সালে ‘গঙ্গাযাত্রা’ সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।