প্লাস্টিক-পলিথিনে কর বরং আরও বাড়ানো দরকার: ইএসডিও

দেশে সব ধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যাগ ও অন্যান্য পণ্যের ওপর বিদ্যমান ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার না করে বরং এককালীন ব্যবহারের প্ল্যাস্টিক পণ্যে কর আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা এনভারয়নমেন্ট অ্যান্ড সোশাল ডেভলপমেন্ট অরগানাইজেশন (ইএসডিও)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2022, 06:44 PM
Updated : 23 June 2022, 06:44 PM

বৃহস্পতিবার লালমাটিয়ায় ইএসডিও কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান সংস্থার চেয়ারপারসন ও সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ।

ইএসডিও চেয়ারপারসন বলেন, সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার নয়, বরং একবার ব্যবহার্য প্ল্যাস্টিকের পণ্য এবং এর উৎপাদন, বিপণন, বিক্রি, ও কাঁচামাল আমদানির উপর আরও বেশি কর আরোপ করা দরকার।

তিনি বলেন, “নিজেদের ভুলের খেসারত দিচ্ছি আমরা এবং প্ল্যাস্টিক ও পলিথিন নিয়ে আমাদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য আরও ভুগতে হবে আমাদের।”

জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রসঙ্গ টেনে বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান মোর্শেদ বলেন, “বাজেটে সব ধরনের পলিথিন ও প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ এবং পলিথিনের তৈরি মোড়কের ওপর বিদ্যমান ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বাজেট প্রস্তাব পলিথিনের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আইনের পরিপন্থি।”

শুল্ক প্রত্যাহারের এই প্রস্তাবকে ‘আইনগতভাবে অকার্যকর সিদ্ধান্ত’ হিসেবে অভিহিত করে এর ব্যাখ্যাও দেন সাবেক এই আমলা।

তিনি বলেন, “বিলাস পণ্য, অপরিহার্য নয় এমন পণ্য, সামাজিকভাবে নিরুৎসাহিত করার মতো পণ্যের উপর সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয় এবং আমাদের সরকার এককালীন ব্যবহার্য প্ল্যাস্টিক পণ্যকে পরিবেশ দূষণের অন্যতম উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তাই, এই ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে এর ব্যবহারকে উৎসাহিতই করা হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে ইএসডিওর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, “যদি এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় তাহলে নিশ্চিতভাবেই আমাদের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

ইএসডিওর মহাসচিব শাহরিয়ার হোসেন বলেন, “প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে একটি বৈশ্বিক চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে আমরা এর রূপরেখা পেতে যাচ্ছি। প্ল্যাস্টিকের দূষণ কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আমাদের জন্য এটা খুবই উপযুক্ত সময় যেমনটি প্রতিবেশি দেশ ভারত নিয়েছে। এছাড়া কানাডাও এ বিষয়ে খুবই ভালো কাজ করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “ভারত যেহেতু একবার ব্যবহার করার প্ল্যাস্টিকের পণ্যের উৎপাদন ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তাই, এরফলে সীমান্তে এই পণ্যের অবৈধ বাণিজ্য বাড়ার আশঙ্কা বেড়ে গেছে এবং বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত একটি প্লাস্টিক হাবে পরিণত হতে পারে।”

বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ২০০২ সালে পলিথিন ব্যগের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে এবং সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য উপকূলীয় ১২টি জেলায় একবার ব্যবহার করার প্ল্যাস্টিক পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

২০২৪ সালের মধ্যে প্ল্যাস্টিকের দূষণ বন্ধের আইনি বাধ্যবাধকতা সম্বলিত বৈশ্বিক চুক্তিকেও সমর্থন করছে বাংলাদেশ। তাছাড়া ২০২২ সালে ১ জুলাই থেকে ভারতে একবার ব্যবহার্য প্ল্যাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধ হচ্ছে।

আরও পড়ুন -