বাংলাদেশ হবে ‘দুর্যোগ সহনীয়’ রাষ্ট্র: প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশে তিন কোটি ‘দুর্যোগ সহনীয় ঘর’ তৈরির পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেছেন, সরকার বাংলাদেশকে একটি ‘দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2019, 01:36 PM
Updated : 12 Nov 2019, 01:36 PM

সত্তরের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের দিনটি স্মরণে মঙ্গলবার রাজধানীতে এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রতিমন্ত্রীর এমন মন্তব্য আসে।

তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকাগুলো দেশের জিডিপি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি থেকে উপকূলকে রক্ষা করাও গুরুত্বপূর্ণ।

“দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এখন আর ত্রাণভিত্তিক নয়, আমরা দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠতে চাই।”

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা বাংলাদেশে ৩ কোটি দুর্যোগ সহনীয় ঘর তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, এটি বাস্তবায়িত হলে দুর্যোগের সময়ে কাউকে বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে হবে না।”

১২ নভেম্বরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘উপকূল দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবিতে প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে বিষয়টি মন্ত্রিসভায় তোলার প্রতিশ্রুতি দেন এনামুর রহমান। 

১৯৭০ সালের ওই দিনে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে ভয়াল এক ঘূর্ণিঝড়। সেই সঙ্গে ১৫ থেকে ২৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ যায় অন্তত দশ লাখ মানুষের। ‘সিম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি ৩ মাত্রার’ সেই ঝড় বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে ‘সত্তরের গোর্কি’ নামে। 

সেই সাইক্লোনের ভয়াবহতার কথা স্মরণ করে আজকের বাংলাদেশের উপকূলকে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য ১২ নভেম্বরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘উপকূল দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে উপকূল ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন।

উপকূল ফাউন্ডেশন ও মাসিক এডুএইডের আয়োজনেই জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ভয়াল ১২ নভেম্বর: টেকসই উপকূল ভাবনা' শীর্ষক ওই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে উপকূল ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক আমিরুল হক পারভেজ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ১৯টির অবস্থান বঙ্গোপসাগরের উপকূলে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর গত ৪৯ বছরে ১৫৩টি ঝড় বা জলোচ্ছ্বাস সইতে হয়েছে উপকূলীয় এসব জেলাকে।

“জলোচ্ছ্বাস, গোর্কি, হারিকেন, নার্গিস, সিডর, আইলা, লাইলা, মোরা, তিতলি, ফণী এবং সাম্প্রতিক সময়ে বুলবুলের আঘাতে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকা পর্যুদস্ত হয়েছে।”

১২ নভেম্বরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে 'উপকূল দিবস' হিসেবে পালন করাসহ ফাউন্ডেশনের আট দফা দাবি এ অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন আমিরুল পারভেজ।

অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের মহাপরিচালক নিখিল রঞ্জন রায়, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক এ কিউ এম মাহবুব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবলিটি স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আকরাম হোসেনসহ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।