সেন্ট মার্টিন থেকে ১৩শ কেজি আবর্জনা ধ্বংস

পরিবেশ সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন থেকে প্রায় ১৩০০ কেজি আবর্জনা ধ্বংস করেছে স্বেচ্ছাসেবকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2015, 02:01 PM
Updated : 17 Nov 2015, 02:01 PM

‘লেটস স্টার্ট এ  সি চেঞ্জ’ স্লোগান নিয়ে ১২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক উপকূলবর্তী সৈকত পরিচ্ছন্নকরণ দিবসের এক কর্মসূচিতে এসব আবর্জনা ধ্বংস করা হয়।

কেওক্রাডং বাংলাদেশ ও ওশন কনজারভেন্সি নামে দুটি সংস্থার সঙ্গে বহুজাতিক কোম্পানি কোকাকোলার এ যৌথ আয়োজনে অন্তত ৪০০ জন স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেন।

আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওশন কনজারভেন্সি মূলত সমুদ্রের পরিবেশ নিরাপদ রাখার জন্য বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে।

সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডংয়ের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয় স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থীরা।

সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডংয়ের পরিচ্ছন্নতা অভিযান।

‘লেটস স্টার্ট এ  সি চেঞ্জ’ একটি পরিবেশ সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান বলে জানান কেওক্রাডং বাংলাদেশের মডারেটর মুতাসির মামুন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “২০০৬ সাল থেকে কক্সবাজারে সৈকত পরিচ্ছন্ন করণে আমরা ওশন কনজারভেন্সির সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করি। ২০১১ সাল থেকে সেন্ট মার্টিনও কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হয়।”

এবার সেন্ট মার্টিনের সৈকত পরিচ্ছন্নকরণ কর্মসূচিতে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও ঢাকা থেকে একদল স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন।

১১ নভেম্বর রাতে ওই স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা থেকে রওনা হয়। পরের দিন দুপুরে সেন্টমার্টিনে পৌঁছায় তারা। ছাত্র, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সমন্বয়ে গড়া এই দলে ছিলেন কোকাকোলা বাংলাদেশ’র ১১ জন প্রতিনিধি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেন্টমার্টিন বাজার ও আশপাশের এলাকায় ময়লা ফেলার প্রায় দেড়শ ঝুড়ি রাখা হয়। স্বেচ্ছাসেবকরা অভিযানে নেমে সৈকত থেকে আবর্জনা কুড়িয়ে ওইসব ঝুড়িতে রাখে। পরে ঝুড়ির ময়লা দ্বীপের এক স্থানে জড়ো করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

কর্মসূচির মুখপাত্র মুনতাসির মামুন বলেন, “আমরা জানি, পুড়িয়ে দেওয়া আবর্জনার বেশ কিছু উপাদানও পরিবেশ দূষিত করে থাকে। কিন্তু এটা ছাড়া আপাতত কোনো উপায় নেই। প্রশাসন যদি জড়ো করা ময়লা দ্বীপ থেকে নিয়ে যেত, সবদিক থেকে ভাল হত।

সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডংয়ের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয় স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থীরা।

সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডংয়ের পরিচ্ছন্নতা অভিযান।

সামাজিক সচেতনতামূলক এই কর্মসূচির বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ”যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এই বোধ মানুষের মধ্যে জাগিয়ে তোলাই আমাদের উদ্দেশ্য।”

সাধারণত কোনো বছরের নভেম্বর থেকে নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি মাস এই সময়ের মধ্যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি হয়।

দ্বীপের এক রিসোর্টের ম্যানেজার হারুনুর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “প্রতি মৌসুমে অন্তত ১৮০০ পর্যটক এই দ্বীপে আসেন। সবাই সচেতন থাকলে দ্বীপের পরিবেশ সুন্দর রাখা সম্ভব।”

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডংয়ের উদ্যোগে সেন্টমার্টিন সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধন উপলক্ষে শোভাযাত্রা।

সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডংয়ের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয় স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থীরা।

ওবাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনকে রক্ষায় সচেতনতা তৈরি এবং এ কাজে তরুণ প্রজন্মকে সেচ্ছাসেবী কাজে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করা দায়িত্ব বলে মনে করেন কোকাকোলার ‘কান্ট্রি পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ম্যানেজার’ শামীমা আক্তার।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ”এ ধরনের পরিবেশবাদী কাজে ওশন কনজারভেন্সির সঙ্গে কোকাকোলা গত ২৯ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী কাজ করে আসছে। এ ধরনের উদ্যোগকে বিশ্বব্যাপী আমরা উৎসাহিত করি।”

স্বেচ্ছাসেবক দলে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আইমান হক বলেন, “আমি এই প্রথম সেন্টমার্টিনে এলাম। দ্বীপ দেখা হচ্ছে, সবার সঙ্গে কাজ করেও ভালো লাগছে। ভালো কাজ করার মধ্যে এক ধরনের আনন্দ আছে।”