মিলনের ইশতেহারে ‘বিনা বেতনে’ কাজ করার অঙ্গীকার

মেয়র হলে কোনো সম্মানী না নিয়ে নগরবাসীর সেবা করার অঙ্গীকার করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2020, 04:15 PM
Updated : 27 Jan 2020, 04:15 PM

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকের এই প্রার্থী সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে, যাতে এই অঙ্গীকার করেন তিনি।

সিটি করপোরেশনের মেয়ররা প্রতিমাসে লাখ টাকার মতো সম্মানী ভাতা পান; এর বাইরে গাড়িসহ নানা সুবিধা পান তারা।

ইশতেহারে মিলন রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখাসহ পরিচ্ছন্ন এবং মশা-মাছিমুক্ত নগরী গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নির্বাচিত হলে ২০ বছরের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে ঢাকাবাসীর জন্য নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ, সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজমুক্ত ঢাকা নগরী, জলাবদ্ধতা নিরসন, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি, নগরবাসীর কর না বাড়িয়ে করপোরেশনের আয়ের নতুন খাত সৃষ্টি, ভাড়াটিয়াদের স্বার্থ সংরক্ষণ, ভবঘুরেদের পুনর্বাসন ও ভিক্ষুক মুক্ত ঢাকা গড়ার অঙ্গীকার করেন। সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত রাখার অঙ্গীকারও করেন তিনি।

মিলন বলেন, “আমরা এই শহরবাসীর স্বস্তি ও শান্তির নিঃশ্বাস ফিরিয়ে দিতে এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। আমাদের শক্তি, সাহস ও ভরসা পল্লীবন্ধু এরশাদের নীতি, আদর্শ, জি এম কাদেরের অভিজ্ঞতা এবং পরামর্শ।”

কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইশতেহার ঘোষণার অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, আলমগীর শিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির, দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোবারক হোসেন আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কথায় আস্থা মিলনের

সরকার না চাইলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না মন্তব্য করে সংসদে প্রধান বিরোধী দলের মেয়র প্রার্থী মিলন বলেছেন, তার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করবেন।

“আমার মনে হয়, এবারের যে নির্বাচন, এটি জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরপেক্ষ করবেন। উনি নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে আশ্বস্ত করছেন। উনি চান নির্বাচন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হোক। না হলে ভোট কেন্দ্র ভোটারশূন্য থাকবে।”

মিলন বলেন, “আমরা যতই বলি নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ, কিন্তু যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে তারা নির্বাচন কমিশনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এটা সত্য কথা- সরকার না চাইলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আমার বিশ্বাস নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, সেই বিশ্বাস থেকেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।”

ইভিএমে ভোট নেওয়ার বিরোধিতা বিএনপিসহ কয়েকটি দল করলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কোনো আপত্তি নেই। তার কথা, সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাইলে যে কোনো পথেই করা সম্ভব।

“ইভিএম আমি কখনও পরীক্ষা করে দেখিনি, ভোটও দিইনি। ইভিএম বা জেনারেল ভোট, এই কোনো কিছুতেই আমার কোনো আপত্তি বা অনাপত্তি নেই। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয় তা ইভিএমে হবে, নরমালেও হবে। যদি সরকার সুষ্ঠু না চায় তাহলে ইভিএমে হবে না, নরমাল পথেও হবে না।”

গত সংসদ নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে থাকা মিলন দাবি করেন, কারচুপিমুক্ত নির্বাচন হলে এবার তার জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

“অনেক সময় যেহেতু আগের রাতে ভোট হয়ে যায়, ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ হারিয়ে গেছে। কয়েক হাজার লোক আমাকে বলেছে- আপনি ভালো লোক আপনাকে ভোট দিলে কী হবে! ভোট তো আগের রাতেই হয়ে যাবে, এমন অভিযোগ আছে।

“আমি জয়ের জন্য মাঠে নেমেছি, জয়ের কোনো বিকল্প নাই। আমরা বিজয়ী হতে চাই। সবাই আওয়ামী লীগ আর বিএনপি করে না, সর্বশেষ সংসদের উপ-নির্বাচনে ২২ শতাংশ লোক ভোট দিয়েছে, যদি ধরেও নেই ৪০ শতাংশের বেশি আওয়ামী লীগ-বিএনপি করে না, ৬০ শতাংশ লোক নিরপেক্ষ।”

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোটে থাকলেও এ নির্বাচন নিয়ে তাদের ‘হাত-পা বাঁধা নেই’ দাবি করে মিলন বলেন, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে লড়ে যাবেন তিনি।