রাজধানী ঢাকাকে ‘সুস্থ, সচল ও আধুনিক’ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ‘ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট’, বায়ুদূষণ রোধে বিদ্যুতচালিত বাস নামানোসহ ৩৮টি প্রতিশ্রুতিতে নির্বাচনী ইশতেহার সাজিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম।
Published : 26 Jan 2020, 12:23 PM
রোববার গুলশানের লেকশোর হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, চিত্র তারকাসহ সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিদের সামনে এই ইশতেহার তিনি তুলে ধরেন।
আনিসুল হকের মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র হওয়ার পর আট মাস সেই দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পেয়েছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিক। সে সময় শুরু করা কাজ ‘এগিয়ে নিতে’ আবারও উত্তরের ভোটারদের সুদৃষ্টি চাইছেন তিনি।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির উপ নির্বাচনে জিতে মেয়র হওয়ার পর সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা আতিককে করতে হয়েছে- তা হল মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু।
নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি বলেছেন, আবার নির্বাচিত হলে রাজধানীর মানুষকে মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে সারাবছর মশক নিধন কার্যক্রম চালাবেন তিনি।
সেজন্যে উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা ওয়াসা, পার্শ্ববর্তী সিটি করপোরেশনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এ কাজ করতে চান তিনি।
আতিকুল ইসলামের ইসলামের হিসাবে ২০২১ সাল নাগাদ শুধু ঢাকা উত্তরের এলাকাতেই প্রতিদিন ৫ হাজার ২০০ টন বর্জ্য তৈরি হবে এবং ইনসিনারেশন (বর্জ্য পোড়ানো) ছাড়া এত বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়।
টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য রাজধানীর অদূরে আমিনবাজারে আরআরএফ (রিসোর্স রিকভারি ফ্যাসিলিটিজ) স্থাপনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য অপসারণ ও জ্বালানিতে রূপান্তরের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার নির্বাচনী ইশতেহারে।
বছর দুই ধরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধুলার প্রভাবে ঢাকার বায়ুমান বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আতিক তার ইশতেহারে বলেছেন, বায়ুদূষণ রোধে ঢাকার রাস্তায় বিদ্যুৎচালিত বাস নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে তার।
আতিকের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে রাজধানীর গণপরিবহন নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে।
এলাকাভিত্তিক পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাত নির্মাণ, যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা, নিরাপদ পথচারী পারাপার নিশ্চিত করতে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল পুশ বাটন সিগন্যাল স্থাপন, নগর পরিবহন ব্যবস্থায় ডিজিটাল ই-টিকেটিং ব্যবস্থা প্রবর্তন, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা চালু, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণ-স্থাপনা এবং গণপরিবহন নিশ্চিতকরণ, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পার্কিং ব্যবস্থা নির্মাণ এবং নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্থানে স্বয়ংক্রিয় ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের কথা রয়েছে এর মধ্যে।
ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাওয়া ঢাকার খালগুলো মশার আবাসস্থ হয়ে ওঠার পাশাপাশি বর্ষায় জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। গতবছর মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েকটি খাল উদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছিলেন আতিক।
আবারও মেয়রের চেয়ারে বসার সুযোগ পেলে রাজধানীর জলাশয় অবৈধ দখলমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার।
আতিকুল ইসলাম বলছেন, নির্বাচিত হলে মিরপুরে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষা প্রাণির ক্লিনিক, আধুনিক জবাইখানা, রাজধানীবাসীর জন্য পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করবেন তিনি।
এছাড়া পাড়া উৎসব উদযাপন, বস্তিবাসীদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরা, ঢাকা দক্ষিণ সিটির বর্ধিত এলাকায় নারীবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, প্রতিটি স্থাপনায় ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ নির্মাণের কথা রয়েছে নৌকার প্রার্থীর ইশতেহারে।