সেই নির্দেশ পেয়ে পুলিশ ও নির্বাহী হাকিমকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম, যিনি ইসির যুগ্ম সচিবের পদে রয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দারুস সালাম থানার ওসি এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাহী হাকিমকে দুটো চিঠি পাঠিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এর আগে বিকালে ইসি সচিব মো. আলমগীর নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তাবিথ আউয়ালের উপর হামলার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা উত্তরে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী তাবিথের প্রচারে হামলার ঘটনাটি ঘটে এদিন দুপুরে গাবতলীর পর্বতার কলাবাজার এলাকায়।
বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে তার উপর চালানো এই হামলায় জড়িত ছিলেন ৯ নং ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মুজিব সারোয়ার মাসুমের কর্মী-সমর্থকরা।
তবে আওয়ামী লীগ নেতারা সন্দেহ করছেন, সিটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি এই হামলার ঘটনা সাজিয়েছে। নৌকার মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামও একই সন্দেহের কথা জানিয়েছেন।
হামলার ওই ঘটনার পর বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা কাসেম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমার কাছে প্রার্থীর উপর হামলার বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। আমি অপেক্ষায় ছিলাম। কোনো অভিযোগ না এলে তা আমরা কীভাবে দেখব?”
ইসির ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেও সন্ধ্যায় তাবিথের প্রতিনিধি আগারগাঁওয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
তার আগে নির্বাচন ভবনে যাওয়া বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের কাছে অভিযোগ শুনে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় ইসি।
লিখিত অভিযোগে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে তাবিথ বলেন, ২১ জানুয়ারি ও ১২ জানুয়ারি তার প্রচারে হামলা হয়েছে।
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জন্য দারুস সালাম থানার ওসিকে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রত্যাহারের দাবি জানান তাবিথ।
হামলার পর দুপুরে দারুস সালামের ওসি তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ওইখানে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। দুইপক্ষ মিছিল করার সময় হাল্কা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। পরে দুই পক্ষকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
সন্ধ্যায় ওসিকে পাঠানো রিটার্নিং কর্মকর্তার চিঠিতে বলা হয়েছে, “প্রার্থী জানানোর পর কী কী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল এবং ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।”
নির্বাহী হাকিমকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, অভিযোগটির বিষয়ে ‘বিধি মোতাবেক’ ব্যবস্থা নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানাতে হবে।
হামলার পর সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা নির্বাহী হাকিম ইমরান শাহরিয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “নির্বাচন কমিশনে বৈঠকে ছিলাম। ঘটনাটা আপনার কাছেই শুনলাম। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, তারা বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
তাবিথ বলেন, “তারা (ইসি) বলবেন, প্রমাণ আনেন, ফুটেজ আনেন। কিন্তু সব জমা দেওয়ার পরেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেবেন না। পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলেই পরিস্থিতি আবার অবনতির দিকে চলে যাচ্ছে।”