সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের নির্দেশনা স্পষ্ট করার আহ্বান এডিটরস গিল্ডের

বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে ‘বিরত’ থাকতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের নির্দেশনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিষয়টি স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছে এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2019, 11:43 AM
Updated : 19 May 2019, 11:43 AM

গিল্ডের নির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি তৌফিক ইমরোজ খালিদী রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, “পাঠক, দর্শক, শ্রোতা তথা জনসাধারণের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।”

সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানের ‘স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার’ লক্ষ্য নিয়ে সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করা এ সংগঠনের পক্ষ থেকে এটাই প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি।

গত ১৬ মে হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ‘ইদানিং’ কোনো কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়া তাদের চ্যানেলে এবং কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়া তাদের পত্রিকায় বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করছে, যা ‘একেবারেই অনভিপ্রেত’।

“এমতাবস্থায়, বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করা হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।”

এডিটরস গিল্ড বলছে, নির্দেশনাটি ‘যে ভাষায়’ দেওয়া হয়েছে, তা অনুসরণ করতে গেলে বিচারাধীন কোনো মামলার কোনো বিষয়েই ‘সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না’।

“বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন আলোচিত মামলার বিচারের অগ্রগতি ও শুনানির সংবাদ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ ও প্রচার করে এসেছে গণমাধ্যম।

“আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, শারমিন রীমা হত্যা, শাজনীন হত্যা থেকে শুরু করে ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানিকালে আদালতকক্ষের কর্মকাণ্ডের খবর গণমাধ্যমে সবিস্তারে এসেছে নিয়মিতভাবে।

“এই নির্দেশনা অনুসরণ করতে গেলে যে কোনো ঘটনার বিচার শেষে রায় হলে কেবল তখনই সংবাদ প্রকাশ কিংবা প্রচার করা যাবে।”

এতদিন ধরে যেভাবে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার চলে এসেছে, সেটাকে ‘ইদানিং’ হিসেবে বর্ণনা করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে হঠাৎ কেন ওই নির্দেশনা দিতে হল- সেই প্রশ্ন রেখেছে এডিটরস গিল্ড।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা মনে করি, রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ-- শাসন বিভাগ/নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন সভা-- প্রত্যেক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

“সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই আদালত প্রশাসনের নির্দেশনার বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলে আমাদের বিশ্বাস।” 

তবে আদালতের কার্যক্রম নিয়ে কোনো ধরনের পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে এডিটরস গিল্ড একমত জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “সে বিষয়ে সচেতন থাকার জন্য আমরাও সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।”

এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা এবং সাংবাদিকতা পেশার উৎকর্ষ বাড়ানোর লক্ষ্যে’ কাজ করছে তাদের সংগঠন। 

সংবাদ প্রকাশনা ও পরিবেশনার সঙ্গে যুক্ত সব ধরনের মাধ্যমের সম্পাদকীয় নেতারা রয়েছেন এ সংগঠনের সঙ্গে।