ইউনূসে আটকে গ্রামীণ ব্যাংকের সংস্কার: মুহিত

গ্রামীণ ব্যাংক সংস্কারে ব্যর্থতার জন্য আবারও নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়ী করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2015, 05:48 PM
Updated : 6 July 2015, 05:48 PM

গ্রামীণ ব্যাংক আইন সংশোধন হলেও চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দিতে এখনও পারেনি সরকার, যে জন্য বরাবরই ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনূসকে দুষে আসছেন অর্থমন্ত্রী।

সোমবার সচিবালয়ে ‘ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যা‌বলি ২০১৪-১৫’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কথা বলেন মুহিত।

তিনি বলেন, “এক সময় ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়টি ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় যখন, তখন অধ্যাপক ইউনূসের নাম উঠে আসে। তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি ক্ষুদ্র ঋণকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন। দুর্ভাগ্য এই যে এক সময় উনি নিজেই ইনস্টিটিউট হিসেবে দাঁড়িয়ে যান। এটা নিয়ে আমাদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

“গ্রামীণ ব্যাংকের অনেক উন্নয়ন করা দরকার। আমরা এটার (গ্রামীণ ব্যাংকের) উন্নতি করতে চাই। কিন্তু তার (ইউনূসের) সমর্থকরা মামলা করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।”

ফাইল ছবি

১৯৮৩ সালে একটি সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের সূচনা হয়। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টাকে ‘শান্তি স্থাপন’ বিবেচনা করে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় গ্রামীণ ব্যাংক এবং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইউনূসকে।

২০১০ এর ডিসেম্বরে নরওয়ের টেলিভিশনে প্রচারিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংককে দেওয়া বিদেশি অর্থ এক তহবিল থেকে অন্য তহবিলে স্থানান্তরের অভিযোগ উঠলে দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।

এই প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনায়  একটি কমিশন গঠন করে সরকার। অবসরের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও পদে থাকার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালের ২ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব থেকে ইউনূসকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে ইউনূস উচ্চ আদালতে গেলেও বিফল হন।

তারপর থেকে গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে ইউনূস ও সরকারের কর্তা-ব্যক্তিদের বদানুবাদ চলছে। গ্রামীণ ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারিতে আনার সরকারি উদ্যোগের সমালোচনা করে তা প্রতিরোধের হুঁশিয়ারিও আসে ইউনূসের কাছ থেকে।

আবুল মাল আবদুল মুহিত (ফাইল ছবি)

সচিবালয়ের অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার নিয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “পুঁজিবাজারের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। আমাদের বাজারের বিনিয়োগকারীরা শুধু চান দাম বাড়বে আর বাড়বে। দাম কমলেই খারাপ। তারা (বিনিয়োগকারীরা) বুঝতে চাইবে না, এটা বাড়া-কমার বাজার। এজন্য এটাকে আমি ফটকা বাজার বলতাম।”

গত পাঁচ বছরে পুঁজিবাজারে অনেক সংস্কার আনার বিষয়টি তুলে ধরে মুহিত বলেন, “সবমিলিয়ে এখন পুঁজিবাজার ইনভেস্টমেন্ট মার্কেটে পরিণত হয়েছে।”

তবে বাংলাদেশের বীমা খাত এখনও ‘অনিয়ম-দুর্নীতিতে ভরপুর’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।