বেতন আর সুদ বাজেটের অর্ধেক
আবদুর রহিম হারমাছি, প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 06 Jun 2015 07:27 PM BdST Updated: 06 Jun 2015 07:27 PM BdST
-
জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ছবি: পিএমও
-
শেখ হাসিনা সরকারের এবারের বাজেটে প্রস্তাবিত ব্যয়ের প্রায় অর্ধেক ঋণের সুদ এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা মেটাতে খরচ হবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
এবার রাজস্ব বাজেটের পরিমাণ এক লাখ ৯৬ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মোট রাজস্ব বাজেটের ৯১ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা বা ৪৭ দশমিক ৭৩ শতাংশই খরচ হবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং সুদ মেটাতে।
মোট বাজেটের ৩১ দশমিক ১২ শতাংশই চলে যাবে এ দুই খাতে।
বাজেটের সবচেয়ে বেশি অর্থ ৫৬ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা চলে যাবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন ভাতায়। যা মোট রাজস্ব বাজেটের ২৯ শতাংশ।
আর সুদ পরিশোধে খরচ হবে ৩৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা বা ১৮ শতাংশ।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নতুন বাজেটের প্রথম দিন ১ জুলাই থেকে প্রায় ১৪ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নতুন বেতন কাঠামোয় বেতন-ভাতা দেবে সরকার।
নতুন বাজেটে এ খাতে বেশি অর্থ ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতি গবেষক জায়েদ বখত।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “চলতি বাজেটে সুদ পরিশোধের জন্য বেশি অর্থ বরাদ্দ রেখেছিলেন অর্থমন্ত্রী। বেতন-ভাতা বাড়ায় এবার এ খাতে বেশি বরাদ্দ রেখেছেন তিনি।”
বাজেট বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন-ভাতা বাবদ এবার ৪৫ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। যা বিদায়ী (২০১৪-১৫) অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ১৬ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা বা ৫৭ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি।
নতুন বাজেটে প্রায় ৫ লাখ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পেনশন বা অবসর ভাতা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা।
নতুন বেতন-কাঠামো
প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, “আমি এই মহান সংসদে আগামী ১ জুলাই
২০১৫ থেকে নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়ন শুরুর ঘোষণা দিচ্ছি। এক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ
পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করব।
“আশা করি, নতুন বেতন কাঠামোয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে স্বস্তি এনে দেবে।”
বিদায়ী অর্থবছরে মূল বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন ভাতা বাবদ বরাদ্দ ছিল ২৮ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা বেড়ে ২৯ হাজার ৩৫০ কোটি হয়েছে।
নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৫ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা।
মূল বাজেটে সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ ছিল ৩১ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা।সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ২৯ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে ৩৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন মুহিত।

অবসর ভাতা বাবদ বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে বরাদ্দ ছিল আট হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটের সংক্ষিপ্তসারে দেখা যায়, অর্থমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা খাতে ছয় হাজার ৫৫৪ কোটি এবং কর্মচারীদের বেতনের জন্য ২২ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন।
এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাতার জন্য রাখা হয়েছে ১৬ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা।
বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে কর্মকর্তাদের বেতন বাবদ তিন হাজার ১৭ কোটি, কর্মচারীদের বেতনের জন্য দশ হাজার ৩৪৬ কোটি এবং ভাতার জন্য বরাদ্দ ছিল ১৫ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।
অন্যান্য ব্যয়
সরবরাহ ও সেবা খাতের খরচের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৭ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। বিদায়ী বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ আছে ১১ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা।
মেরামত ও সংরক্ষণ বাবদ নতুন বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে চার হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ আছে চার হাজার ৪৫১ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনায় বরাদ্দ প্রায় এক হাজার কোটি টাকার কমেছে।
বিদায়ী বছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১৬ হাজার ১৬ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তা কমিয়ে ১৫ হাজার ৭৭২ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছেন অর্থমন্ত্রী।
বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় এ খাতে এবার বরাদ্দ কমেছে বলে মনে করছেন জায়েদ বখত।
ঋণের চিত্র
এবারের ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৫৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা ধার করার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার।
বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৩ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৫৪ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা করা হয়েছে।
অভ্যন্তরীন উৎসের ৫৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকার মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক থেকে ধার করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩১ হাজার ২১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৩১ হাজার ৭১৪ কোটি টাক করা হয়েছে।
ব্যাংক বহির্ভূত উৎস অর্থাৎ সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে১৮ হাজার কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এ খাত থেকে ১২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা ধার করার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল সরকার। পরে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
নতুন বাজেটে বিদেশী উৎস থেকে ৩২ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন মুহিত। বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে বিদেশী উৎস থেকে ২৬ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।
সংশোধিত বাজেটে অবশ্য তা কমিয়ে ২৩ হাজার ৮৭২ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
-
মাসে হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট মজুদ করা যাবে না
-
মহামারীতে সরকারি ব্যয় কমেছে, সংসদে তথ্য
-
উৎপাদিত পণ্যে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান শিল্পমন্ত্রীর
-
সাড়ে ৬ মাসেই গত অর্থবছরের ৭৭% রেমিটেন্স
-
দেশি মাছের উৎপাদন বাড়াতে চাই গবেষণায় নতুনত্ব: মন্ত্রী
-
সুবিধাবঞ্চিদের জন্য বিশ্বব্যাংকের আরও ৬৫ লাখ ডলার
-
রেমিটেন্সের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য প্রণোদনা বাড়ানোর পরামর্শ
-
মহামারীর প্রভাব মোকাবেলায় সরকারের আরও দুই প্রণোদনা
সর্বাধিক পঠিত
- ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যু
- বাইডেনের জন্য ট্রাম্পের চিঠি
- তামিমকে ১ বছর পর বিচার করতে বললেন সাকিব
- তৃতীয় সারির দলের বিপক্ষে হেরে বিদায় রিয়ালের
- ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলের মালিক এখন শুধুই রোনালদো
- রেকর্ড গড়া অভিষেকেও আকিল হোসেনের আক্ষেপ
- এমন অভিষেক আগে দেখেনি কেউ
- ৪৪ বছর বয়সে মাঠে ফিরে দিলশানের চমক
- মলিন ক্রিকেটের দিনে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক সাকিব
- ‘আসল দল আসছে’ ভারতকে পিটারসেনের হুঁশিয়ারি