গৃহস্থালিতে গ্যাসের ব্যবহারের বিপক্ষে মুহিত

চুলায় জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের ব্যবহার বন্ধে দেশের মানুষকে সচেতন করতে প্রবাসীদের সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2014, 05:55 AM
Updated : 7 Oct 2014, 12:44 PM

সোমবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের এক অনুষ্ঠানের তিনি বলেন, “আমেরিকার মত উন্নত রাষ্ট্রে বাস করছেন আপনারা। আপনারাই পারবেন আত্মীয়-স্বজনকে গ্যাসের অপব্যবহার বন্ধে উদ্বুদ্ধ করতে। বিশেষ করে চুলায় জ্বালানি হিসেবে এর ব্যবহার না করার বিষয়ে সচেতন করতে।

“এর বদলে গ্যাসের সাহায্যে পরিচালনা করা যায় এমন শিল্প-কারখানা যত বেশি সম্ভব স্থাপন করতে হবে। তাহলে উন্নয়নের পরিক্রমা আরো ত্বরান্বিত হবে।”

নিউ ইয়র্ক সিটি এস্টোরিয়ায় ক্লাবে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল করতে ‘অবিস্মরণীয়’ ভূমিকা রাখায় মন্ত্রীকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান এবং সঞ্চালন করেন যুগ্ম সম্পাদক আসাদ।

জালালাবাদের গ্যাস দিয়ে অন্য এলাকায় শিল্প-কারখানা হচ্ছে, অথচ বৃহত্তর সিলেটের মানুষ গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন না  বলে মতবিনিময় সভায় কয়েকজন অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জবাবে মুহিত বলেন, “দেশের উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সামগ্রিক উন্নয়নের ছোঁয়া সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে সিলেটও বাদ যাবে না।”

তিনি বলেন, “১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন-বাংলাদেশ হবে এশিয়ার সুইজারল্যান্ড। বঙ্গবন্ধু সেভাবেই অগ্রসর হচ্ছিলেন। কিন্তু দুষ্টলোক, চক্রান্তকারী তাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি থামিয়ে দিয়েছিল।

“এরপর চলে গেছে বহু বছর। অবশেষে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১০ সালে আশপাশের দেশের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে আমরা ভারতেরও সহায়তা চেয়েছি। কানেকটিভিটির  এ মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটলে বাংলাদেশের যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে।”

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এ কে এ মোমেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এবং সেক্রেটারি সাজ্জাদুর রহমান, সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সভাপতি মিসবাহ আহমেদ, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এম এ কাইয়ুম, সাবেক সহসভাপতি  সাইফুল আলম সিদ্দিকী প্রমুখ।

সভায় বেহাল সড়ক-মহাসড়ক প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বাড়ির পাশের রাস্তাটি নির্মাণ করতে হবেই-এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাটের সংস্কার ও উন্নয়নের গতি থেমে ছিল। অনেক চেষ্টার পর এখন রাস্তা সংস্কার ও পুণর্নির্মাণের ব্যাপারে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।

“বাংলাদেশে ২১ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। এটি আর বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। যতোটুকু আছে তাকে চলাচলের উপযোগী করতে সবধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে সারাদেশেই অসাধারণ উন্নতি ঘটেছে। উন্নয়নের গতি এগিয়ে চলছে।”

অনুষ্ঠানে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সমস্যার প্রতি অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। সিলেটে সার কারখানা স্থাপন, আরেকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও উঠে।