মঙ্গলবার বিশ্ব ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি জোহানেস জুট অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি- তাদের (বিশ্ব ব্যাংকের) উচিৎ ছিল আমাদের পদ্মা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা। কিন্তু সেটা না করে তারা আমাদের দুইটি বছর সময় নষ্ট করেছে।
“এখন যদি তারা আমাদের এই প্রকল্পে আবার যুক্ত হতে চায় তাহলে আমরা যেখানে আছি অর্থ্যাৎ কাজ যতটুকু এগিয়েছে, যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে, তার ভিত্তিতেই যুক্ত হতে হবে।”
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা প্রকল্প থেকে অর্থায়ন প্রত্যাহার করে নেয়া বহুজাতিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান জানতে চাইলে জুট সাংবাদিকদের বলেন, ওই দুর্নীতির ঘটনার কারণে দেশটি থেকে মুখ ফেরানো উচিৎ না, বরং ভিন্নভাবে এর সঙ্গে আমাদের যুক্ত থাকা উচিত।
তিনি বলেন, “আমরা সরকারকে এ ধরনের দুর্নীতির ব্যাপারগুলো ঘটার কারণ উদঘাটনে সহযোগিতা করতে পারি।”
‘বিশ্ব ব্যাংকের এই বোধোদয়ে’ সন্তোষ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।
দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০১২ সালের জুনে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন চুক্তি বাতিল করে বিশ্ব ব্যাংক। অনেক দেন-দরবার শেষে আবারো প্রকল্পে ফিরে আসে বহুজাতিক সংস্থাটি।
তবে বিশ্ব ব্যাংক আবারো প্রথম থেকে সেতু নির্মাণের সব প্রক্রিয়া শুরুর কথা বললে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে এই কথা বলে সরকার ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ‘না’ করে তাদেরকে।
এরই মধ্যে নিজস্ব অর্থে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয় সরকার, সে অনুযায়ী এখন কাজ চলছে।
তবে বাংলাদেশের অন্যান্য প্রকল্পে ঋণ-সহায়তা অব্যাহত রেখেছে বিশ্ব ব্যাংক।
“বিশ্ব ব্যাংকের কারণে আমাদের দুই বছর সময় লস হয়েছে। প্রকল্পটি ২০১২ সালে শুরু করতে পারতাম সেটি ২০১৪ সালে শুরু করেছি। তবে তাদের চলে যাওয়াতে আমাদের কোনো অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়নি।”
পদ্মা সেতু প্রকল্পে কাজ পাওয়া চীনের সাইনো হাইড্রা কোম্পানি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “যোগাযোগমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেইন প্রকল্পে এই কোম্পানি ভালো কাজ করছে। তবে তাদের কাজের ধীরগতি আছে। চার লেইন প্রকল্পে অন্যান্য অবকাঠামো অপসারণ করার জন্য প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে।”
গত অর্থবছরে বিভিন্ন দাতাদেশ এবং সংস্থা রেকর্ড পরিমাণ অর্থ ছাড় করেছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।