ওই বস্ত্রকলগুলো বিক্রির জন্য করা দুটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বুধবার অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করা হচ্ছে।
বিক্রির জন্য মাগুরা টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও রাঙ্গামাটি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের দর প্রস্তাব করা হয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। অথচ এ দুটি মিলের দায়দেনা হিসেবে সরকারকে পরিশোধ করতে হবে প্রায় ১৭৪ কোটি টাকা।
বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান মির্জা আবদুল জলিল মঙ্গলবার বিকেলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামীকাল (বুধবার) অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে দুটি প্রস্তাবই উঠবে এবং আশা করছি এবার পাশও হয়ে যাবে।”
এর আগেও সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে মিল দুটি বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছিল। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠক থেকে প্রস্তাব দুটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো বেসরকারিকরণ কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মাগুরা টেক্সটাইল মিলের দৃশ্যমাণ সম্পদের পরিমাণ ৫৯ কোটি ৭১ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১৬ দশমিক ১৭ একর জমির মূল্যই ৪৭ কোটি টাকা। কারখানাটিতে ২৫ হাজার ৫৬টি টাকু রয়েছে। এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১৬ লাখ কেজি সুতা।
মিলটি কেনার জন্য সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মেসার্স কবির এন্টারপ্রাইজ ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রস্তাব করেছে। এরপর প্রতিষ্ঠানটি আরো আড়াই কোটি টাকা বৃদ্ধি করে মোট ৩১ কোটি টাকার দরপ্রস্তাব করেছে।
অথচ বিক্রির পরও মিলটির দায়দেনা হিসেবে ১০৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে সরকারকেই।
অন্যদিকে, রাঙ্গামাটি টেক্সটাইল মিলের দৃশ্যমান সম্পদের মূল্য ৫৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর ২৬ দশমিক ২৪ একর জমির মূল্য ধরা হয়েছে ২১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। কারখানাটিতে ১৮ হাজার ৫৭৬টি টাকু রয়েছে। এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ লাখ ৭৪ হাজার কেজি সুতা।
মিলটি কেনার জন্য সাত্তার এন্টারপ্রাইজ ২৮ কোটি ১০ লাখ টাকা দরপ্রস্তাব করেছে। এরপর এক কোটি টাকা দর বাড়িয়ে তা ২৯ কোটি ১০ লাখ করা হয়েছে। এ মিলটিও বিক্রির পর সরকারকে দায়দেনা হিসেবে পরিশোধ করতে হবে ৬৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
মাগুরা টেক্সটাইল মিলস ২০০৮ সালের মে মাস থেকে এবং রাঙ্গামাটি টেক্সটাইল মিলস ২০০৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে বন্ধ রয়েছে।
সরকারের দায়দেনাই পরিশোধ না হলেও প্রস্তাবিত দামে মিলদুটি বিক্রির উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা জলিল বলেন, “জিনিসটা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। লোকসান গোনার চাইতে যদি (মিলগুলো) চলে তাহলে দেশের উপকার হবে।”
কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, ১৯৯৩ সাল থেকে সরকার ৭৪টি কারখানা বেসরকারিকরণ করেছে। এর মধ্যে দরপত্র দিয়ে ৫৪টি শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে ২০টি কোম্পানি বেসরকারিকরণ করা হয়েছে।
তবে বেসরকারিকরণ করার প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ রয়েছে। কম মূল্যে সরকারি কারখানা কিনে ওই জমিতে অন্য ব্যবসা গড়ে তোলারও অভিযোগ রয়েছে।