মুদ্রানীতির জন্য মতামত নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

সরকারের শেষ বছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণার জন্য বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতামত নেওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2013, 10:23 PM
Updated : 17 Jan 2013, 10:23 PM
 

জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য এই মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে বাংলাদেশ ব্যাংক তিনটি মতবিনিময় সভা করছে, যার প্রথমটি হয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আর্মি গলফ ক্লাবে। গভর্নর আতিউর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

এরপর অর্থনীতিবিদ, সাবেক গভর্নর, শীর্ষ ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক থেকে ঊর্ধ্বতন সব কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দফায় মতবিনিময় হবে। 

মত বিনিময় শেষে আগামী ৩০ জানুয়ারি আসবে নতুন মুদ্রানীতির ঘোষণা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাসান জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মুদ্রানীতি প্রণয়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এখন সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। এসব মতামত নিয়ে দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাস্তবধর্মী মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান মুদ্রানীতির বাইরে নতুন ভঙ্গিতে মুদ্রানীতি করার সুযোগ নেই। সামনে সরকারের নির্বাচনী বছর। এ সময় যেমন প্রবৃদ্ধি দরকার, তেমনি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখও জরুরি। এ কারণে প্রবৃদ্ধি সহায়ক সংযত মুদ্রানীতিই থাকবে আগামী ছয় মাস। অর্থাৎ অবকাঠামো ও উৎপাদনশীল খাতে অর্থপ্রবাহ বাড়নো হলেও তারল্য প্রবাহের লাগাম ধরে রাখা হবে।

ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়েছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থা সরকারের আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি নাও হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। এ অবস্থায় একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রবৃদ্ধি সহায়ক মুদ্রানীতি করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম আবারো বাড়ানো হয়েছে। এতে কৃষি ও শিল্প পণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বাড়বে, যা মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। মুদ্রানীতি করার ক্ষেত্রে এই চাপও রয়েছে। 

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। আর বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলে ধরা হয়েছে।

ডিসেম্বর শেষে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। নভেম্বরে এই হার ছিল ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।

জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণে ১৮ দশমিক ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর অর্থবছরের শেষে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবদ্ধি দাঁড়াবে ১৮ শতাংশ।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আগের মুদ্রানীতির এ অবস্থান ধরে রাখতে পারবে না বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, “আগামী ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”