সিআইবিতে ‘মিথ্যা’ তথ্য দিলে ব্যাংক কর্মীকেও জরিমানা

বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি তথ্যদাতা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেও জরিমানা করার নিয়ম জারি হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2022, 05:31 PM
Updated : 21 July 2022, 05:31 PM

ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিলে বা তথ্য গেপান করা হলে এতোদিন শুধু ব্যাংক ও আর্থক প্রতিষ্ঠানকেই জরিমানা করার বিধান ছিল। এখন তথ্য সরবরাহকারী ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নতুন এ নিয়ম জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) প্রধান নির্বাহীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফ থেকে।

সেখানে বলা হয়েছে, ব্যাংক ও এনবিএফআইয়ের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিযুক্ত তথ্য সরবরাহকারী কর্মীকে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে, যদি ভুল বা মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, “ব্যাংকিং খাতের ঋণ শৃঙ্খলা সুসংহত করার নিমিত্তে সর্বসময়ে সিআইবি তথ্যভাণ্ডারের সঠিকতা বজায় রাখা ও হালনাগাদ তথ্য সংরক্ষণ একান্ত আবশ্যক।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী সিআইবিতে দেওয়া তথ্য স্পর্শকাতর বিবেচনায় ‘অতি গোপনীয়’ হিসেবে ধরা হয়।

সেজন্য কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সিআইবিতে দেওয়া তথ্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থাকে দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে আদালত ও সংসদ চাইলে সিআইবিতে থাকা তথ্য সরবরাহ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ন্যূনতম ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা করার সুযোগ রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

নতুন নিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, সিআইবিতে কোনো ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া বকেয়া ঋণের তথ্যের কোনো অংশ মিথ্যা/ভুল হলে এবং তথ্য গোপন প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কিংবা ক্ষেত্রমতে মিথ্যা/ভুল তথ্য দাখিলকারী কর্মকর্তাকে বা তথ্য গোপনের জন্য দায়ী কর্মকর্তাকে ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।

এ ধরনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা কর্মীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট অংকের জরিমানা কেন আদায় করা হবে না- সেই মর্মে ব্যাখ্যা চাইবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে ৭ দিনের মধ্যে ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে চিঠি দেওয়া হবে।

জরিমানার অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে কোনো নোটিস না দিয়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে সেই টাকা কেটে নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের কর্মীর ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কেটে নেওয়া জরিমানার অর্থ ৩০ দিনের মধ্যে ওই কর্মকর্তার কাছ থেকে আদায় করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানাতে হবে।

আগে শুধু ৫০ হাজার বা তার বেশি টাকার ঋণের তথ্য সিআইবিতে জানানোর বাধ্যবাধকতা ছিল। এখন এক টাকার ঋণের তথ্যও সিআইবিতে জানাতে হয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে।

কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নামে নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সিআইবি থেকে অনাপত্তি নিতে হয়। ঋণ খেলাপি কাউকে নতুন ঋণ দেওয়ার বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

আবার নির্বাচনে অংশ নিতে হলেও সিআইবি তালিকায় ঋণ খেলাপি থেকে মুক্ত হতে হয়।