বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘ব্লু ইকোনমি অ্যান্ড মেরিটাইম সিকিউরিটি: বাংলাদেশ পারসপেকটিভ’ শীর্ষক সেমিনারের এ প্রস্তাব দেন তিনি।
অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, “অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতির অপরিসীম সম্ভাবনার কারণে নিজেদের ভূমিকা নিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে বেশ সংশয় পরিলক্ষিত হয়।
“সুতরাং আমি মনে করি, সুনীল অর্থনীতি সম্পর্কিত কাজ সম্পাদনের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় অথবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র বিভাগ হওয়া উচিত।”
সরকারের দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় (২০২১-২০৪১) সুনীল অর্থনীতি নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকার কথাও তুলে ধরেন শামসুল আলম।
তিনি বলেন, সুনীল অর্থনীতির সুফল পেতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য জ্ঞান ও সম্পদকে চালিত করার বিষয়ও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
সুনীল অর্থনীতি নিয়ে সরকারি কার্যক্রমে সমন্বয় না থাকা এবং বহুবিধ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ছোট পরিসরে কাজ চলার কথা উঠে আসে অন্যদের বক্তব্যেও।
বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান কাজী ইমতিয়াজ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, সুনীল অর্থনীতির থেকে সফলতার জন্য জাতীয়ভাবে সমন্বিত কৌশল প্রণয়ন, সমন্বিত কার্যক্রম, সম্পদ ও মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব পাওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের রয়েছে।
”সম্ভাবনা পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোর জন্য জাতি হিসাবে আমাদের কী করার আছে এবং কী অর্জন করতে পারি, তা জানার বিশদ কৌশলগত গবেষণার দরকার। সমন্বিত উদ্যোগেরও এক্ষেত্রে প্রয়োজন।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল খোরশেদ আলম বলেন, বিশাল জলরাশিতে যে যে সম্পদ রয়েছে, তার ১০ ভাগের আনুমানিক হিসাব করা সম্ভব হয়েছে। তাতে দেখা যায় ২৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ রয়েছে।
”২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার এখন মানুষের দ্বারা ব্যবহৃত হয়। তার মানে হচ্ছে, উন্নত দেশগুলো সব সম্পদ ব্যবহার করে ফেলেনি। সুতরাং আমাদেরও সুযোগ আছে সম্পদ আহরণের।”
বিশাল সমুদ্রসীমার মানচিত্র দেখিয়ে তিনি বলেন, সীমাহীন সমুদ্র থেকে সম্পদ আহরণের সুযোগ আমাদের আছে। শুধু অন্য দেশের জলসীমা থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকতে হবে। এজন্য জাহাজ দরকার আর সেটাকে চালিত করার মানুষ ও তাদের সক্ষমতা দরকার।
সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাকসুদুর রহমান বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি এম হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে সেমিনারের ওয়ার্কিং সেশনে পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির ও গবেষণা ফেলো মৌটুসি ইসলাম।