এই মুহূর্তে আইএমএফের ঋণের প্রয়োজন নেই: অর্থমন্ত্রী

এক দশক বাদে বাজেট সহায়তার জন্য বাংলাদেশ আইএমএফের দ্বারস্থ হচ্ছে বলে খবর এলেও সংস্থাটির কাছ থেকে কোনো ঋণ এখন নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2022, 11:50 AM
Updated : 20 July 2022, 01:43 PM
তিনি বলেছেন, “যদি প্রয়োজন হয় আমরা (ঋণ) নেব। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন নেই।”

বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

এই সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়া মুস্তফা কামাল এটাও বলেছেন, ঋণের বিষয়ে আইএমএফ কিংবা সরকার কোনো পক্ষই কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়নি।

মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের অভিঘাতে বাংলাদেশও যখন ভুগছে, তখন আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে মতবিনিময় করে।

আইএমএফের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ যে চাঁদা পরিশোধ করে, তাতে ঋণের কোটা ১০০ কোটি ডলার। এর সর্বোচ্চ ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ বাংলাদেশ এক বছরে ঋণ নিতে পারে।

চলমান সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশে আইএমএফের কাছ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে চাইছে বলে খবরও এসেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আইএমএফেরর একটা কনসালটেটিভ কমিটি বাংলাদেশে আছে। তারা সরকারকে পরামর্শ দেন, সরকারও তাদের পরামর্শ দেয়। তারা যে আসছে, আমাদের কাছে তারা আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাবনা দেয়নি। আমরাও তাদের কোনো ফরমাল প্রস্তাবনা দিইনি। এই পর্যন্ত হচ্ছে আইএমএফ সংক্রান্ত জবাব।”

আইএমএফ সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রস্তাব করেছে বলে যে খবর এসেছে- সে বিষয়ে প্রশ্নে তিনি আবারও বলেন, “আমরা আইএমএফের কাছে কোনো প্রকার অর্থ নেওয়ার জন্য আবেদন করিনি। তারাও প্রস্তাব দেয়নি।”

“তাদের পরামর্শগুলো সরকারের জন্য উপকারী হয়। তারা সংস্কারপন্থি কিছু প্রস্তাব দেয়। তাদের পরামর্শগুলো দেশের জন্য ভালো হয়। তাদের প্রস্তাব পেলে আমরা গ্রহণ করি,” বলেন অর্থমন্ত্রী।

আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিলেও দেশের স্বার্থ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “অনেকের আশঙ্কা যে আমরা হয়ত এমন কিছু নিয়ে নেব, কমিটমেন্ট করব বা চুক্তি করব, যেটা আমাদের দেশের উপকারে আসবে না। প্রস্তাবনা আসলে আপানারা ভালোভাবেই জানবেন। এমন কোনো প্রকল্প বা ফান্ডিংয়ে যাব না, যেটা দেশের স্বার্থের পরিপন্থি হয়। নিজের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অর্থ নেব না।”

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ নিয়ে সরকার ও আইএমএফের ভাষ্যের ফারাকের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বিভিন্ন দেশ যেভাবে হিসাব করে, আমরাও সেভাবে হিসাব করেছি।”

বাংলাদেশের ঋণ পরিশোদের সক্ষমতা রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আইএমএফ যে পরিমাণ সহযোগিতা করেছে, তারা কি সেই পরিমাণ পায়নি? তারা বলতে পারবে না যে আমরা একদিন পরে পেমেন্ট করেছি। ঋণ দিলে তারাও নিশ্চিত থাকবে, আমরাও তাদের বার বার আশ্বস্ত করেছি যে আমাদের ঋণ দিয়ে তা কখনও আমাদের মাফ করতে হবে না।”