তবে এতে কোনো সমস্যা দেখছেন না বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
এর আগেও নতুন নিয়োগ পাওয়াদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধানের দায়িত্ব নিতে কয়েকদিন দেরির উদাহরণ রয়েছে। সদ্য মেয়াদ শেষ করা গভর্নর ফজলে কবির ২০১৬ সালে নিয়োগের সময় যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ওই বছর ১৫ মার্চ আতিউর রহমানের পদত্যাগের পর তিনি দেশে ফিরে ২০ মার্চ দায়িত্ব নেন।
ফরাসউদ্দিন জানান, এর আগে বিদেশে থাকায় ফখরুদ্দীন আহমেদও গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার ২০ দিন পর দায়িত্ব বুঝে নেন।
এদিকে রোববার ফজলে কবিরের শেষ কর্মদিবসের পর থেকে নতুন গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার মাঝের সময়টুকু ডেপুটি গভর্নররা নিজেদের কার্যপরিধি অনুযায়ী বিভাগগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় জানানো হয়েছে। রোববারই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এই নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়।
‘‘গর্ভনরের ডাক গ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি গর্ভনর ১ আহমেদ জামাল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী সিদ্ধান্তটি রোববারই বাস্তবায়ন শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’’
সাধারণত গভর্নর কোনো কারণে ছুটিতে বা বিদেশ সফরে গেলে এভাবেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অর্থমন্ত্রীকে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও নেটওয়ার্ক বিভ্রাটে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
আর্থিক বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিন একটি সভায় আছেন বলে জানান। পরে এসএমএস দিয়ে বিষয়টি জানানোর পর কল দিলেও তা রিসিভ করেননি।
তিন মেয়াদে ছয় বছর তিন মাস দায়িত্বে থাকা গভর্নর ফজলে কবিরের শেষ কর্মদিবস ছিল গত রোববার। ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনা দেন কর্মকর্তারা।
আর এক মাস আগে তার উত্তরসূরি হিসেবে গত ১১ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার, যিনি বাংলাদেশের ব্যাংকের দ্বাদশ গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।
২০১৮ সালের জুলাই থেকে অর্থ সচিবের দায়িত্বে থাকা আব্দুর রউফ পদাধিকার বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদেরও সদস্য।
নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তাকে সরকারি দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে অবসর নিতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী, ২৫ বছর চাকুরি জীবন পার হলে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তারা স্বেচ্ছা অবসরে যেতে পারেন। এজন্য এক মাস আগে পদত্যাগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই নিয়ম মেনে ১১ জুলাই থেকে তার স্বেচ্ছা অবসর কার্যকরে সম্মতি দিয়েছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় বলে খবর বেড়িয়েছে।
পদ শূন্য থাকার বিষয়ে সমস্যা দেখছেন না ১৯৯৮ থেকে ২০০১ মেয়াদে গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘গভর্নর বিদেশে গেলে বা ছুটিতে থাকলে প্রটোকল অনুযায়ী দায়িত্ব দেওয়া হয়। ডেপুটি গভর্নরদের মধ্যে একজনকে গভর্নরের ডাক ফাইল গ্রহণ ও বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর ডেপুটি গভর্নররা নিজ নিজ পোর্টফলিওর কাজ চালিয়ে যান।’’
‘‘এখানে সমস্যা কিছুই নাই। অতীতে অনুসরণ করে আসা নিয়মাচারটি এবার নতুন গভর্নর যোগ না দেওয়ার বেলায়ও অনুসরণ করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: