বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন। ফজলে কবিরের নেতৃত্বে এটাই হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শেষ মুদ্রানীতির ঘোষণা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যলয়ে বিকেল ৩টায় হবে মুদ্রানীতি ঘোষণার সংবাদ সম্মেলন।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মুদ্রানীতি ঘোষণা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। তবে মহামারীর কারণে ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে সংবাদ সম্মেলন ছাড়াই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছিলেন গভর্নর।
এক সময় ছয় মাস পরপর মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হলেও গভর্নর ফজলে কবির ১ বছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রচলন করেন। আগামী ৩ জুলাই গভর্নর হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করে বিদায় নিচ্ছেন তিনি।
সরকার বাজেটে যে নীতি ও উন্নয়ন কর্মসূচি ঠিক করে, তা বাস্তবায়নের জন্য সহায়ক আর্থিক পরিবেশ সৃষ্টি এবং নির্দিষ্ট সময়ে বাজারে অর্থের প্রবাহ ঠিক রাখাই মুদ্রানীতির লক্ষ্য। এমনভাবে এই নীতি সাজানো হয় যাতে অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং দারিদ্র বিমোচনে সরকারের প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব হয়।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নে বছরের পুরো সময়টায় বাজারে অর্থপ্রবাহ ও আঙ্গিক কেমন হবে, তাও মুদ্রানীতিতে ঠিক করে দেওয়া হয়।
জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেট পাস হবে বৃহস্পতিবার বিকালে। বাজেট পাস হওয়ার পরে সাধারণত জুলাই মাসের শেষের দিকে মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতবার মুদ্রানীতিও জুলাই মাসের ২৯ তারিখে ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার তা এগিয়ে এল।
বাজেটে নেওয়া সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার।
আর মহামারীর ধাক্কায় সঙ্কটে থাকা ব্যবসা-বাণিজ্যে অর্থের জোগান বাড়াতে গেল অর্থবছরের বাজেটে সরকারের লক্ষ্যমাত্রার ভিত্তিতে গতবারের মুদ্রানীতিতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৭৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ যোগানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। তাতে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা ছিল ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
বেসরকারি খাতের জন্য ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা ঋণের সংকুলান রেখে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এ দুইয়ে মিলে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ। ওই মুদ্রানীতিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ‘সম্প্রসারণ ও সংকুলানমুখী’।
ব্যাপক মুদ্রা (এম২) বৃদ্ধির নিরাপদ সীমা ১৫ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ সম্পদের প্রবৃদ্ধি ১৬.৫ শতাংশ ও বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি ১০.৪ শতাংশ করার প্রাক্কলন করা হয়েছিল মুদ্রানীতিতে।
ওই দিন নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় রেপোর হার নতুন করে ঠিক করা হয়। ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে এ হার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়। আর রিভার্স রেপোর সুদহার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ বেসিস কমিয়ে নামিয়ে আনা হয় ৪ শতাংশে। সম্প্রতি ডলারের বাজারে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে রেপো হার আবার ৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
পুরনো খবর