৮ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠানোর লক্ষ্য

নতুন অর্থবছরে ৮ লাখ ১০ হাজার বাংলাদেশির বিদেশে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2022, 06:51 PM
Updated : 9 June 2022, 06:55 PM

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, “২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৮ লাখ ১০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার এবং ৫ লাখ ২০ হাজার জনকে বিভিন্ন ট্রেডে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে।”

নতুন অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদের সামনে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী ‍মুস্তফা কামাল।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উৎসাহিত করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আগামীতে অভিবাসনে পিছিয়ে পড়া দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সমগ্র দেশ থেকে অধিকহারে অভিবাসনে উৎসাহী করার লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।”

নতুন অর্থবছরে উপজেলা পর্যায়ে একশ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণকাজ শুরু করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হলেও চলতি অর্থবছরে তা কমে আসার কথা তুলে মুস্তফা কামাল বলেন, “২০২১-২০২২ অর্থবছরের শুরু হতেই প্রবাস আয় কিছুটা হ্রাস পেতে শুরু করায় বৈধ পথে প্রবাস আয় প্রেরণকে অধিকতর উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে আমরা এ খাতে প্রণোদনার হার দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২ দশমিক ৫ শতাংশে নির্ধারণ করেছি।”

নতুন অর্থবছরেও আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা বহাল রাখা হবে বলেx বাজেট প্রস্তাবে জানিয়েছেন তিনি।

শিল্প উৎপাদন আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা, গ্রামীণ পর্যায়ে নতুন নতুন কাঁচা সড়ক পাকা করা, কৃষিতে ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়া, আইটি খাতে ফ্রিল্যান্সার সংখ্যা বাড়ানো, এসএমই খাতে ঋণের সুযোগ বৃদ্ধি, জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা, শ্রমনিবিড় ও রপ্তানিমুখী উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা, বৈদেশিক কর্মসংস্থানের বাজার সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো উন্নয়নের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ এনে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে বাজেট প্রস্তাবে।

কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে বেকারত্ব বীমা, ম্যাটারনিটি বীমা, অসুস্থতাজনিত বীমা এবং কর্মক্ষেত্রে আঘাতজনিত ক্ষতি বিমার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

এর মধ্যে কর্মক্ষেত্রে আঘাতজনিত ক্ষতি স্কিমের একটি পাইলট প্রকল্প চালু করতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু বাকি তিনটি বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা বা রূপরেখা বাজেটে দেখা যায়নি।

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘অতিমারির তৃতীয় বছরে এসে আমাদের অগ্রাধিকার হবে আয়বর্ধন ও কর্মসৃজনের ধারা অব্যাহত রেখে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে টেকসই করা ও এর মাধ্যমে অর্থনীতির ভিত্তিকে একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া।

“এজন্য আমরা প্রণোদনা কার্যক্রমগুলোর বাস্তবায়ন আগামী অর্থবছরে অব্যাহত রাখব।”

বিষয়ভিত্তিক দক্ষ কর্মী তৈরিতে শিক্ষা কার্যক্রম সংশোধন ও পুনর্বিন্যাস করার কথাও বাজেটে বলা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “বেকার জনসংখ্যার জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ কর্মসংস্থান সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ তৈরির জন্য ‘কর্মসংস্থান অধিদপ্তর’ গঠন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’’

এছাড়া আগামী ২০২২-২০২৩ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে দুই লাখের বেশি ব্যক্তিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে।