বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী প্রস্তাব করেন, করের আওতা বাড়ানোর সরকারের অবিতর্কিত রাজস্ব দাবি পরিশোধে ব্যর্থ হলে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান প্রবর্তনের।
নতুন এই বিধান চালুর জন্য আয়কর আইনে নতুন বিধান সংযুক্ত করে বলা হয়েছে, কর আদায়ের উদ্দেশ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা অন্যান্য সেবাদাতাকে ২১ দিনের মধ্যে গ্রাহকের সেবা বন্ধের জন্য চিঠি দিতে পারবেন উপ কর কমিশনার।
মহামারীর পর যুদ্ধের বাস্তবতায় দাঁড়িয়েও উন্নয়নের হারানো গতিতে ফেরার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর হিসেবে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন কামাল।
বাজেট প্রস্তাবে বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত অন্যান্য উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের ন্যায় ’আশাব্যঞ্জক’ না হওয়ার কথা তুলে নতুন বিধান আরোপের কথা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “উন্নত দেশের সোপানে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কর-জিডিপি অনুপাত অনেকাংশে বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এ উদ্দেশ্যে দেশের করযোগ্য বিপুল জনগোষ্ঠীকে করের আওতায় আনতে পারলে কর আহরণের সক্ষমতা ও আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির আওতা বৃদ্ধি পাবে।”
করের আওতা সম্প্রসারণের জন্য সেবার সংযোগ বিচ্ছিন্নের প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি কিছু পদক্ষেপও নেওয়ার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
এরমধ্যে ক্রেডিট কার্ড নেওয়া, ইংরেজি মাধ্যমে সন্তানকে ভর্তি, ৫ লাখ টাকার উপরে ঋণ নেওয়াসহ অনেক ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ উপস্থাপনের বাধ্যবাধকতা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।
এছাড়া, স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড, অনুমোদিত গ্র্যাচুইটি ফান্ড, পেনশন ফান্ড, অনুমোদিত সুপারএন্যুয়েশন ফান্ড এবং শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ব্যতীত অন্যান্য ফান্ডের রিটার্ন দাখিলের প্রস্তাবও করেছেন অর্থমন্ত্রী।
নতুন বাজেট প্রস্তাব পাস হলে যে সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভার্সন চালু রয়েছে তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করার বাধ্যতামূলক হবে।
ধারাবাহিক তিন বছর বা ততোধিক সময়ব্যাপী কোন কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ থাকলে পরিচালকদের নিকট হতে বকেয়া অবিতর্কিত কর আদায়ের বিধান করার প্রস্তাবও করেছেন অর্থমন্ত্রী।