ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট কমলো ১০%

সয়াবিন ও পাম তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি পর্যায়ে ১০ শতাংশ ভ্যাট তুলে নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2022, 02:15 PM
Updated : 16 March 2022, 02:15 PM

বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে আমদানিতে বিদ্যমান ১৫ শতাংশ ভ্যাট থেকে ১০ শতাংশ প্রত্যাহার করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। অর্থাৎ এখন সয়াবিন ও পাম তেল বিদেশ থেকে আনতে ভ্যাট দিতে হবে ৫ শতাংশ।

এনবিআর জানিয়েছে, এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হয়ে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে।

এর আগে আরেক প্রজ্ঞাপনে ভোজ্যতেলের পরিশোধন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং বিপণন পর্যায়ে ৫ শতাংশসহ মোট ২০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

সে হিসাবে ভোজ্যতেলের ওপর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩০ শতাংশ ভ্যাট তুলে নেওয়া হলো।

গত সোমবার ভোজ্যতেলের উৎপাদন ও ভোক্তা পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে এসআরও প্রকাশ করে এনবিআর।

এ দুই পর্যায়ে ভ্যাট পুরোপুরি তুলে নেওয়া হলেও তা বাজারে দাম কমাতে খুব সামান্য ভূমিকা রাখবে বলে জানান ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

তাদের কাছ থেকে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট তুলে দেওয়ার পরামর্শ আসে। দ্রুতই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরকে চিঠিও দেওয়া হয়।

এরপর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট তুলে নেওয়ার আলোচনা সামনে এলে এ বিষয়ে সরকারি পদক্ষেপের কথাও জানানো হয়।

রোজার আগে বাজার পরিস্থিতি সামলাতে তেল, চিনির মত নিত্যপণ্য আমদানিতে ভ্যাট কমানোর নির্দেশ দেয় মন্ত্রিসভা।

গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছিলেন, “ভোজ্য তেল আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। এটা কীভাবে, কতটুকু কমানো যায়, সে বিষয়ে এনবিআরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোজ্যতেল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমাতে বলা হয়েছে।”

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “ভোজ্যতেলে ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ কমানো হবে। উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ সেখানে কমানোর কথা বলা হয়েছে। আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ রয়েছে, সেখান থেকে ১০ শতাংশ কমানো হবে। কী পরিমাণ কমানো হবে সেটা এনবিআরের এসআরও প্রকাশের পর জানা যাবে।”

এরপর সোমবার বিকালে সয়াবিন তেল ও পাম তেল পরিশোধনে এবং বিপণন পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানায় এনবিআর, যা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে থাকায় গত কিছুদিন ধরেই হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এরমধ্যে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে থাকায় সরকারকে উদ্যোগী হতে হয়েছে।   

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) মনিটরিং সেলের হিসাবে, গত পাঁচ বছরে চাল-ডাল, তেল, লবণ, হলুদ-মরিচ, সবজি, মসলাসহ জীবনধারনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম অনেক ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

এই সময়ে সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ শতাংশ, আর পাম তেল ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গরুর মাংসের দাম ১৫ শতাংশ, খাসির মাংস ২৩ শতাংশ এবং দেশি মুরগির দাম বেড়েছে ৩৯ শতাংশ।

আরও পড়ুন