বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ চায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতও

দেশের বাইরে বিনিয়োগের সুযোগ দাবি করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2022, 01:10 PM
Updated : 29 Jan 2022, 02:23 PM

শনিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আইসিটি অ্যান্ড ডিজিটাইজেশন অব ট্রেড বডিজ সংক্রান্ত এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে সরকারের কাছে এ দাবি জানান তারা।

সম্প্রতি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশে কোম্পানি খোলা ও বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে নতুন বিধিমালা প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী বার্ষিক রপ্তানি আয়ের ২৫ শতাংশ বিদেশে কোম্পানি খোলার পেছনে বিনিয়োগ করতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো।

বৈঠকে কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, সরকার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারীদের এ সুবিধা দিলে বাংলাদেশকে রিব্রান্ডিং করার অবারিত সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশের সক্ষমতাকে ভিন্নভাবে জানতে পারবেন বৈশ্বিক উদ্যোক্তারা। ফলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) এ সংক্রান্ত খসড়া নীতিতে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

কমিটির চেয়ারম্যান মো. শাহিদ-উল-মুনীর জানান, এরই মধ্যে দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে বিডাকে অনুরোধ করা হয়েছে।

চলতি সপ্তাহে এ সংক্রান্ত বিধিমালায় শুধু রপ্তানিকারকদের জন্য বিদেশে বিনিয়োগের সুবিধা রাখা হয়েছে।

এ শর্ত পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানিয়ে কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, বিদ্যমান শর্তটি বাতিল না হলে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও নতুন উদ্যোক্তারা বঞ্চিত হবেন।

বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা ও পণ্যকে ২০২২ সালের বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২৫ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারি নীতি সহায়তা আরও বাড়াতে হবে।

এসময় স্ট্যান্ডিং কমিটিকে রপ্তানি লক্ষ্য অর্জনে একটি রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানান তিনি।

বৈঠকে জানানো হয়, বর্তমান আয়কর অধ্যাদেশে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আইসিটি নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রস্তাবিত নতুন আয়কর আইনে ২০৩০ সাল পর্যন্ত এ অব্যাহতি বহাল রাখার দাবি করেন উদ্যোক্তা।

এছাড়াও প্রণোদনা থেকে অগ্রিম আয়কর কেটে রাখার বিধান বাতিল চান কয়েকজন ব্যবসায়ী।

বৈঠকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইনে স্থানীয় উৎপাদকদের কাছ থেকে সেবা কেনার কথা বলা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়।

উদ্যোক্তারা বলেন, দেশে বিভিন্ন ধরনের তথ্যপ্রযুক্তি সেবা সহজলভ্য হলেও আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করায় বঞ্চিত হচ্ছেন দেশি উদ্যোক্তারা।

আইনটি যথাযথভাবে মানা হলে, দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে এবং মেড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং আরও জোরদার করা সম্ভব হবে।

বৈঠকে আয়কর আইন ও আগামী বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতের খসড়া সুপারিশ প্রণয়নের জন্য একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়।

সভায় কমিটির কো-চেয়ারম্যান শোয়েব আহমেদ মাসুদ, সদস্য মো. মোতাহার হোসেন খান, মো. নাজমুল করিম বিশ্বাস কাজল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।