ওএমএস যাচ্ছে উপজেলায়

সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় খোলাবাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রি বা ওএমএস কার্যক্রম এবার উপজেলা পর্যায়ে শুরু হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2022, 06:54 AM
Updated : 19 Jan 2022, 09:52 AM

১ হাজার ৭৬০টি ডিলারের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলা পর্যায়ে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

বুধবার রাজধানীর ওসমানি মিলনায়তনের জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এখন সাতশর বেশি ডিলারের মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে ওএমএস কার্যক্রম চলছে। বৃহস্পতিবার থেকে তা উপজেলা পর্যায়ে বিস্তৃত হচ্ছে।

“ওএমএস যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয় তা নিশ্চিত করতে এবং অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিসিদের।”

ওএমএসএর চাল ৩০ টাকা এবং আটা ১৮ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।

ইউনিয়ন পর্যায়েও ওএমএস দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ইউনিয়ন পর্যায়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি রয়েছে। তাই উপজেলা পর্যায়ে দেওয়া হবে।

“যদি একটি উপজেলায় তিনটি পৌরসভা থাকে। ওএমএস ওই তিনটি পৌরসভায় দেওয়া হবে।”

দেশে খাদ্যের কোনো ‘অভাব নেই’ মন্তব্য করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, "একটি কথা আপনাদের বলে রাখি, গরু আগে ভারত থেকে আসত। এখানে কোনো খামার ছিল না, সেটা কোরবানির গরু বলেন বা মাংসের জন্য, যাই বলেন। সব ভারত থেকে অবৈধভাবে আসত, আমরা বড় বড় গরু দেখতাম। এখন কিন্তু আমাদের দেশে ভারত থেকে আর গরু আসে না। দেশেই উৎপাদন হয় এবং অনেক খামার।”

আর সেসব খামারে গরু মোটাতাজা করার জন্যও অনেক চাল খরচ হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেখানেও একটি বিষয় রয়েছে। চালের কিন্তু হাহাকার নাই। উৎপাদন যেমন বেড়েছে হিউম্যান অ্যান্ড নন হিউম্যান কনজাম্পশন দুটোই কিন্তু বেড়েছে। ২৫ লাখ মানুষের মুখ প্রতিদিন বাড়ছে।"

এখন চিকন চাল খাওয়ার প্রবণতাও মানুষের বেড়েছে মন্তব্য করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, “একজন রিকশাওয়ালা পর্যন্ত সরু চাল খেতে চায়। সরু চালের উপর চাপ তো একটু পড়েছেই।”

মিনিকেট যে কোনো ধানের জাত নয়, বিভিন্ন ধানের চাল ছেঁটে সরু করে মিনিকেট নামে বিক্রি হয়, সে কথা তুলে ধরে এই চাল ব্যবসায়ী বলেন, “সরু চালের কিন্তু এখন অফ টাইম। সাধারণত বোরো মৌসুমে এটা উৎপাদন হয়, এখন ধান লাগাবে। আমরা এটা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছি।

“প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা ফাইলও পাঠিয়েছি, আরো কিছু ট্যাক্স কমিয়ে সরু চাল বেসরকারিভাবে আমদানি করা যায় কি না।”

বাজারে চালের দাম বাড়ার পেছনে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, গমের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।

“ভারত থেকে মিনিকেট যেটা আসে, আমরা ২৫ ভাগ পর্যন্ত ট্যাক্স এনে দেওয়ার পরও ১৭ লাখের অর্ডার করে মাত্র ১০ হাজার পেয়েছি। তার অর্থ, সেখানে এত দাম বেড়েছে সেটা এনে এখানে পোষাচ্ছে না। শিপের ভাড়াও চার-পাচঁগুণ বেশি বেড়েছে।"

ওএমএস কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে মনিটরিং টিম করা হয়েছে। উপজেলা ও জেলায় যেন সব সময় মনিটরিং হয়- সে ব্যবস্থা হয়েছে।

“যদি কেউ অবৈধ মজুদ করে রাখে, এটাও বলা হয়েছে, তাদেরকে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট করা, মজুদ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে আমরা চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছি। আমরা এটা টাস্কফোর্স করে মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোলরুম করেছি।

“ডিসিদের বলা হয়েছে, ডিলাররা ২ টন চাল নিয়ে গেলেও সেটা ওইদিন বিক্রি করার কথা। দেড় টন বিক্রি করে বাকিটা 'ব্ল্যাকে' বিক্রি করে, এটা হল একটা বড় সমস্যা।”

চালের অবৈধ মজুদের বিষয়ে কারও কাছে তথ্য থাকলে তা জানানোর আহ্বান রেখে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের জানালে আমরা যদি সেখানে হানা দিতে পারি, তাহলে আমার বিশ্বাস চালের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনো অবস্থা নেই।”