রপ্তানি আয় ৮০ বিলিয়ন ডলারে নেওয়ার লক্ষ্য

মহামারীর সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মধ্যেই নতুন রপ্তানি নীতিতে পণ্য ও সেবা মিলিয়ে দেশের রপ্তানি আয়কে আট হাজার কোটি বা ৮০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2022, 09:37 AM
Updated : 12 Jan 2022, 09:37 AM

অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলছেন, বিশ্ব বাণিজ্যের প্রেক্ষাপট এবং দেশীয় সক্ষমতা বিবেচনা করেই নতুন এই লক্ষ্য ঠিক করেছেন তারা।

সর্বশেষ রপ্তানি নীতিমালায় এ লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬০ বিলিয়ন ডলার; এখনও সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ।

বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রণিত ২০২১-২০২৪ বছরের রপ্তানি নীতির খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, “২০২৪ সাল পর্যন্ত রপ্তানির একটা নীতিমালা আমরা অনুমোদন দিয়েছি। আমাদের বিদ্যমান রপ্তানি বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৬০ বিলিয়ন ডলার। এটাকে বাড়িয়ে ৮০ বিলিয়ন ডলারে নির্ধারণ করেছি। এর জন্য যেসব এমেন্ডমেন্ট ও অ্যাডজাস্টমেন্ট করা দরকার সেগুলো করা হবে।”

সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা মিলিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৪ হাজার ৫৩৭ কোটি ডলার। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং সেবা খাত থেকে ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আয় হবে বলে সরকার আশা করছে।

ইপিবির সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস শেষে পণ্য রপ্তানিতে ২৮ দশমিক ৪১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

এ সময়ে ২ হাজার ৪৬৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে; গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে যা ছিল এক হাজার ৯২৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। মহামারীর কারণে গতবছর বৈদেশিক বাণিজ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

রপ্তানি লক্ষ্য বাড়ানোর পাশাপাশি বেশ কিছু নীতিগত পরিবর্তন আনার কথাও জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, নতুন নীতিতে অগ্রাধিকারমূলক খাতে সম্ভাবনাময় কিছু পণ্য ও সেবা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কৌশল গ্রহণ করে রপ্তানি বাণিজ্য কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশে থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কর্মকৌশল নিয়েও বিস্তারিত পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে টেকসই নীতিকৌশল গ্রহণে উৎসাহিতকরণ, আইসিটি ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজসহ অন্যান্য সেবাখাতে সুবিধা দেওয়া, রপ্তানিমুখী সব খাতে একইভাবে নীতিসুবিধা দেওয়া, নারী ও খুদ্র উদ্যোক্তাদের রপ্তানিতে সম্পৃক্ততা বাড়ানো, আমদানি নীতি আদেশের সাথে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোর সামঞ্জস্য রাখা, ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজিকরণে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে নতুন রপ্তানি নীতিতে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কমপ্লায়েন্স ও স্ট্যান্ডার্ড’ প্রতিপালনে খাতভিত্তিক সুপারিশ আনা হয়েছে নতুন নীতিতে। ইন্টারমিডিয়েট ও রিসাইকেলড পণ্য উৎপাদনে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। পণ্য ও সেবা বহুমুখীকরণের সুপারিশ করা হয়েছে। রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, হালাল পণ্য উৎপাদন ইত্যাতি প্রসঙ্গেও রয়েছে দিক নির্দেশনা। সব মিলিয়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডিংকে জোরদার করার কথা বলা আছে।