চট্টগ্রামেও হবে মেট্রোরেল, গন্তব্য বিমানবন্দর থেকে রেলস্টেশন

ঢাকার পর এবার চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2022, 11:56 AM
Updated : 4 Jan 2022, 12:01 PM

শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেলের রুটের কথাও বলেছেন তিনি।

মঙ্গলবার পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়ে জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঢাকার প্রকল্প শেষ হওয়ার পর বন্দরনগরীতে মেট্রোরেলের কাজ শুরুর কথা বলেছেন।

ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের সব বড় নগরীতে মেট্রোরেল নির্মাণের বিষয়েও ভাবতে বলেছেন সরকারপ্রধান।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেকে) বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল নির্মাণের বিষয়ে নির্দেশনা দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন। ছবি: পিআইডি

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি বৈঠকে অংশ নেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- “মেট্রোরেল শুধু ঢাকায় কেন? চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল হওয়া উচিত।

“এছাড়া দেশের অন্যান্য বড় শহর যেখানে বড় পুরনো বিমানবন্দর আছে, সেসব শহরেও মেট্রোরেল জাতীয় আইডিয়া আমাদের করা উচিত” “

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর আগামীতে প্রকল্প হাতে নেওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের জন্য মেট্রোরেল আলোচনায় আসছে।

“আমরাও এখানে পরিকল্পনা কমিশনকে উৎসাহ দেব এবং তাড়াতাড়ি (প্রকল্প) আসার জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকেও উৎসাহ দেব।”

বৈঠকে উপস্থিত ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকার মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) শেষ হওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণে কাজ শুরুর আগ্রহ দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মান্নান বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এত আয়ের সুযোগ আছে; কিন্তু হচ্ছে না। তাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আয় বৃদ্ধি করা উচিত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈঠকে চট্টগ্রামের চাক্তাই খালের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করতে নীচের দিকে যাওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “চাক্তাই খালের তলদেশে পাকা করে দেওয়ার কারণে নীচে পানি যেতে পারে না। এতে পানি শুধু ওপরেই থাকছে। এতে সর্বনাশ হচ্ছে। পানি নীচে যেতে পারে না বলে উপচে পড়ে শহর ডুবছে।“

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা, “খবরদার নালা বা খালের নীচে এভাবে (পাকা করে) দেবেন না। তবে সেচের জন্য করতে পারেন। কারণ সেচের পুরো পানিটা রক্ষা করতে চায়। কিন্তু এটাতো সেচ নয়। এটাতো বন্যা নিয়ন্ত্রণ। সুতরাং এটা নীচে খালি রাখতে হবে।”

বৈঠকে উপস্থিত চট্টগ্রামের মেয়রকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী সিটি করপোরেশনের আওতা বেশি না বাড়িয়ে স্যাটেলাইট টাউন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বলেও জানান মান্নান।

তিনি বলেন, প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করতে না পারলে পরামর্শকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার বিষয়টিও বৈঠকে গুরুত্ব পায়।

মন্ত্রী বলেন, অনেক প্রকল্পের সমীক্ষা হওয়ার পরও প্রকল্প ঠিক সময়মতো শেষ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে বৈঠকে কথা উঠেছিল। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই হওয়ার পরও দেখা যায় দুইবার তিনবার সংশোধন করতে হয়, দাম বাড়াতে হয়।

“ঠিকাদার বকা খায়, পিডব্লিউডি (গণপূর্ত অধিদপ্তর) বা সড়ক বকা খায়, কিন্তু পরামর্শকরা আড়ালে থাকেন।“

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “পরামর্শকদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে দেখি কী করা যায়।“

সভায় এ বছর চলমান তিনটি মেগা প্রকল্প শেষ করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

সভায় জানান হয়, আগামী জুনে পদ্মা সেতু (সড়ক), অক্টোবরে কর্ণফুলী টানেল এবং ডিসেম্বরে মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) শেষ হবে।