বুধবার ‘পাঁচ দশকের উন্নয়ন অভিযাত্রায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাজধানী ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক গভর্নররা বক্তব্য দেন। বাণিজ্য বিষয়ক দৈনিক সংবাদপত্র বণিক বার্তা দ্বিতীয়বারের মতো এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
“এরপর দেশের বড় বড় ঋণ খেলাপিকে ২০০৯ সালে একবার এবং ২০১৪ সালে একবার পুরোপুরি সাদা করে দেওয়া হয়েছে। তারা এখন আর খেলাপি নাই। তারা সম্পূর্ণ নিয়মিত হয়ে গেল। রাষ্ট্রকে এ জন্য অনেক মূল্য দিতে হল এবং এখনও দিতে হচ্ছে বলে আমি মনে করি।”
বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এ সম্মেলনে আলোচনায় গভর্নরদের বাইরে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।
ফরাসউদ্দিন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের অনেক সমস্যা সঙ্কুল প্রেক্ষাপটেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আশার আলো বলে প্রশংসা করেন।
তিনি টাকা পাচার রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করার পরামর্শ দেন।
করোনাভাইরাস মহামারীতে অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দেওয়া সরকারি প্রণোদনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনার টাকা বড় ব্যবসায়ীরা পেলেও ছোট ব্যবসায়ীরা পাননি।
ফরাসউদ্দিন এসময় বাংলাদেশ ব্যাংক যেভাবে ডলারের দাম ধরে রাখছে তা নিয়েও সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, “রপ্তানির জন্য ১ শতাংশ প্রণোদনা আর রেমিটেন্সের জন্য ২ শতাংশ প্রণোদনা- এগুলো অর্থনীতি শাস্ত্র সমর্থন করে না। কোনো দেশের অর্থনীতির অভিজ্ঞতা এগুলোকে কিন্তু সাক্ষ্য দেয় না।“
তাবে তার সঙ্গে কিছুটা দ্বিমত প্রকাশ করে আরেক সাবেক গভর্নর আতিউর ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে রেমিটেন্সে প্রণোদনা তুলে না দিয়ে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন।
আলোচনায় দেশের আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানোর তাগিদ দেন অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, অন্যান্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে আর্থিক খাতে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি আছে সেগুলোর রেগুলেশন আরও কঠিন হওয়া উচিত। কারণ এসব কোম্পানিতে মানুষের টাকা থাকে।
তিনি বলেন, “একই পরিবারের কাছে কোনো ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়া অথবা একই পরিবারের কাছে একাধিক ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়া ঠেকানোর জন্য যে রেগুলেশন দরকার, সেটা আমরা এখনও শিখিনি। সেটা হয়তো আমাদের ঠেকে শিখতে হবে।“
সম্মেলন শুরু হয় দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের এমডি ও সিইও মাসরুর আরেফিনের স্বাগত বক্তব্য দিয়ে। সঞ্চালনা করেন বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।