মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে খাদ্যে কমলেও খাদ্য বর্হিভূত মূল্যস্ফীতি বেশি বাড়ার প্রভাব পড়েছে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে। এতে নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2021, 05:56 PM
Updated : 26 Dec 2021, 05:57 PM

রোববার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, নভেম্বরে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে আগের বছর একই মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর অক্টোবরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৭০।

সর্বশেষ হিসাবে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি গেল নভেম্বরে ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ হয়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে তা ২০২০ সালের নভেম্বরের তুলনায় কম। ওই বছর নভেম্বরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আর গেল অক্টোবরে এ হার ছিল ৫ দশমিক ২২।

নভেম্বর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়েছে। এ খাতে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছর একই সময়ে ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ ছিল।

জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মূল্যস্ফীতি এখন ‘আউট অব রিচ’ হয়ে গেছে বলতেই হবে। আমদানি ব্যয় ও দেশের বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়া এর পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে। আর অভ্যন্তরীণ বাজারে তেলের দামটা বেড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণে। আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবেই দেশের বাজারে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

“সাপ্লাই চেইনে পোস্ট কোভিড যে শক চলছে সেটাই মূল কারণ। এটা ভারতেও বেশি, যুক্তরাষ্ট্রেও বেশি বা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতেও এখন মূল্যস্ফীতি বেশি। এর কারণে দেশের বাজারে আরও কিছু সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে,” যোগ করেন তিনি।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন উল্লেখ করে তিনি এ বাস্তবতা মাথায় রেখেই সরকারকে আমানতের সুদহার নিয়ে ভাবার পরামর্শ দেন।

বিবিএসের পরিসংখ্যানে নভেম্বরে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বাড়ার তথ্য দেওয়া হয়েছে। গেল নভেম্বরে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২০ শতাংশ, যা আগের বছর একই মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

এ সময়ে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ, যা পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে আগের বছর নভেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ০১ শতাংশ।

গ্রামে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে অনেক বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

অপরদিকে শহরে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

তবে পয়েন্ট টু পয়েন্ট হিসাবে গেল নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ হয়েছে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫ দশমিক ১১ শতাংশ।

আর শহরে এ সময়ে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ উন্নীত হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।