মঙ্গলবার সচিবালয়ে সার মজুদের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা শেষে এক ব্রিফিংয়ে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্পপ্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, কৃষি সচিব মেসবাহুল ইসলাম, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিসিআইসির চেয়ারম্যান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বরে ইউরিয়া সারের তিন লাখ ১৯০২ টন চাহিদার বিপরীতে মজুদ রয়েছে ৮ লাখ ৩২ হাজার টন। অর্থাৎ ৫ লাখ টনেরও বেশি উদ্বৃত্ত আছে। এ মসে টিএসপির চাহিদা এক লাখ ১৪ হাজার টন, মজুদ এক লাখ ৯২ হাজার টন। ডিএপির চাহিদা দুই লাখ ৮৮ হাজার ৬১২ টন, এর বিপরীতে মজুদ ৫ লাখ ৯৬ হাজার টন। এমওপির চাহিদা এক লাখ ২৯১৮৫ টন, মজুদ রয়েছে তিন লাখ ১২ হাজার টন।
২০২০ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় এখন সব রকমের সারই বেশি পরিমাণে মজুদ রয়েছে বলে তথ্য দেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “গুজব ছড়িয়ে, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে যেসব ডিলার, ব্যবসায়ী, দোকানদার বেশি দামে সার বিক্রি করবে, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
“আপাতত ৩০ দিন অব্যাহতভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রয়োজন হলে পুরো বোরো মৌসুমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।”
বোরো মৌসুমে সারের প্রয়োজন হয় সবচেয়ে বেশি। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার ‘সব রকমের আগাম প্রস্তুতি’ নিয়ে রেখেছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বর্তমানে সারের যে মজুদ রয়েছে এবং পাইপলাইনে যে সার রয়েছে, সব মিলিয়ে সারের কোনো রকম সংকট হবে না।”
আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম ‘অস্বাভাবিক’ বৃদ্ধি পেয়েছে মন্তব্য করে রাজ্জাক বলেন, যে সারের দাম প্রতি টন ৩০০ ডলার ছিল, তা বেড়ে এখন হয়েছে ৯৬৪ ডলার।
“আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়ে আমাদের মত দেশগুলোকে শোষণ করছে। আর এদিকে দেশে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীরা গুজব ছড়িয়ে কোথাও কোথাও এলাকাভেদে বিচ্ছিন্নভাবে সারের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা কঠোরভাবে এটি মনিটর করছি, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তৎপর রয়েছেন।”
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, “সারের উৎপাদন, আমদানি ও মজুদে কোনো সমস্যা নেই, সারের কোনো ঘাটতি নেই। কৃষকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে গুজব ও অপপ্রচার ছড়িয়ে সারের দাম বৃদ্ধি করে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিকভাবেও বিরোধীরা সুযোগ নিতে পারে।”
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরুল আশরাফ খান বলেন, “গত কয়েকদিন সার পরিবহনে কিছু সমস্যা ছিল, তা কেটে গেছে। কোনো ডিলার সারের দাম বেশি নিলে তার সদস্যপদ বাতিল করা হবে।”