দায়িত্ববোধ থেকে করদাতা হতে বললেন অর্থমন্ত্রী

নিজের ধর্মীয় ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ব্যবসায়ীদেরকে করজালে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2021, 12:04 PM
Updated : 10 Dec 2021, 02:27 PM

শুক্রবার রাজধানীতে সেরা ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে এরিস্টো ফার্মা, স্কয়ার টয়লেট্রিজ, মায়া বিড়ি ফ্যাক্টরি, খুলনার এস এম মোটরস, সিলেটের এমকো বাজাজ ইন্টারন্যাশনাল, ম্যাপস ইউনিয়ন, ই-ডটকো, গ্রে-অ্যাডভার্টাইজিং বাংলাদেশ ও রোবাট বস বাংলাদেশকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

ভ্যাট দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, যে কর আদায় করা হচ্ছে তা খরচ করা হচ্ছে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ও দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে। সামর্থ্যবানদের উচিত নিজেদের ওপর অর্পিত করভার পরিশোধের মাধ্যমে এ কাজে অংশ নেওয়া।

 “আপনার সম্পদে প্রতিবেশীর অধিকার আছে। সেজন্যই ইসলামের শুরুর দিক থেকেই ট্যাক্স আদান-প্রদানের পদ্ধতি চালু আছে। ভ্যাটের এ অর্থ দিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।

প্রতিবেশীর হক যারা আদায় করে না ‘তারা সঠিক মুসলমান নয়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা পেট পুরে খেলাম, আর প্রতিবেশি অভূক্ত থাকল সেটা ঠিক হবে না। এ রেভিনিউ দিয়ে ভৌত অবকাঠামো ও অভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূল ধারায় নিয়ে আসার কর্মসূচি বাস্তবায়ন কা হচ্ছে।,”

কর আহরণ করতে গিয়ে কারদাতাদের ওপর যাতে বাড়তি বা অতিরঞ্জিত চাপ না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে এনবিআর কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন তিনি।

করদাতাদের সুরক্ষার প্রতি নজর দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে কর দিয়ে আসছেন তাদের ওপর আরও করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। অন্যরা যারা এখনও কর দিচ্ছেন না তাদের করের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অনেকে ট্যাক্স দেওয়া শুরু করতে ভয় পায়। তাদের ভয় দূর করতে হবে। এটা ধর্মীয় দায়িত্ব- এ বিষয়টি তাদের বোঝাতে হবে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের গত ১২ বছরে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অর্জন রূপকথার গল্পকেও হার মানাবে। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হয়েছিল মাত্র ৪৪ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে তিন লাখ ২৮ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা।

“এ একটি বিষয় লক্ষ্য করলেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটা ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। তবে আমাদেরকে আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে।“

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেন, ব্যবসায়ীরা কর ছাড় চাচ্ছেন। আর কর্মকর্তারা বলছেন, যারা কর অব্যাহতি সুবিধার মধ্যে রয়েছেন তাদেরকে করের আওতায় নিয়ে আসার জন্য। আসলে দুটি কথারই যৌক্তিকতা রয়েছে।

“তবে আমাদেরকে করজাল বিস্তৃত করার দিকেই বেশি নজর দিতে হবে। করহার লাঘব করে করজাল বিস্তৃত করলেই এ সমস্যার সমাধান হবে।“