এলডিসি সুবিধাহীনতার ধাক্কা সামলাতে কার্যকর নীতি দরকার: আঙ্কটাড কর্মকর্তা

মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে পাওয়া আন্তর্জাতিক সুবিধাগুলো বন্ধ হওয়ার আগেই কার্যকর নীতি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা – আঙ্কটাড এর কর্মকর্তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডকটমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2021, 05:09 PM
Updated : 27 Sept 2021, 05:09 PM

সোমবার ২০২১ সালের ‘আঙ্কটাড এলডিসি প্রতিবেদন’ প্রকাশ উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আয়োজনে এ পরামর্শ দেন তারা।

আলোচনায় সংস্থার অর্থনীতি বিষয়ক কর্মকর্তা জিওভানি ভ্যালেন্সিসি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপের উপর বেশি পরিমাণে নির্ভরশীল। আর সরকার এসব পদক্ষেপকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে।

”এ কারণে তৈরি পোশাকের মত রপ্তানি খাতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, যা দ্বিমুখী ধারালো তলোয়ারে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হলেও যাতে অগ্রগতি থেমে না যায়, সেজন্য শিল্পের নীতি কাঠামো তৈরি করা দরকার।”

বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির তুলনায় আরও বাড়াতে এই অর্থনীতিবিদ এ খাতের বিনিয়োগকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন।

জিওভানি ভ্যালেন্সিসি বলেন, বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি করলেও এখনও মাথাপিছু জিডিপি বৈশ্বিক গড়ের মাত্র ১৫ শতাংশ। এক্ষেত্রেও বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানও মধ্যম আয়ের দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অভ্যন্তরীণ সম্পদের কার্যকর ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ডমেস্টিক রিসোর্চ মবিলাইজেশন জিডিপির ১০ ভাগ মাত্র। এটা বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটা দক্ষিণ এশিয়ার কয়েক দেশের তুলনায়ও কম। আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে হবে, পাশাপাশি যেসব খাত ভালো করবে সেখানে বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার।“

মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে উত্তরণ হলেও এলডিসির জন্য নতুন করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন পড়বে বলেও মন্তব্য করেন বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ।

”এলডিসির সুবিধায় অগ্রাধিকার হয়ত থাকবে না, কিন্তু অনুদান যেটা দেওয়া হবে, তা বেশি উৎপাদনসক্ষম খাতে দেওয়া যেতে পারে।”

অধ্যাপক মোস্তাফিজ বলেন, জিডিপিতে যদি উৎপাদন খাতের অবদান দ্বিগুণ করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ দরকার হবে।

”বাংলাদেশের মত দেশে বৈষম্য ‍দূর করার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে কৌশলগত জায়গায় কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে হবে। আর আমাদেরকে হোমওয়ার্ক করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, “এলডিসি থেকে উত্তরণের পর অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যিক সুবিধা আরও ১২ বছর চালু রাখার কথা বলছে বালাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলো। হয়ত এত সময় পাওয়া যাবে না, তবুও আমরা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব।”  

ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো বলেন, বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ যাতে সাবলীলভাবে হয়, সেই সহযোগিতা দিয়ে যাবে জাতিসংঘ।

ঢাকায় জাতিসংঘ কার্যালয়ের অর্থনীতিবিদ মাজেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনায় অন্যদের মধ্যে আঙ্কটাডের এলডিসি বিভাগের প্রধান রলফ ট্রেগার বক্তব্য দেন।