এসপিএম চালু হলে দ্রুত তেল খালাসের পাশাপাশি বছরে প্রায় ৮০০ কোটি সাশ্রয় হবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ।
মঙ্গলবার মহেশখালীতে প্রকল্পের স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণ এলাকায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আগামী বছরের অগাস্টেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি।”
ফলে এসব ট্যাংকার গভীর সমুদ্রে নোঙ্গর করে এবং ছোট ছোট লাইটারেজ ভেসেলের মাধ্যমে অপরিশোধিত তেল খালাস করে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আনা হয়। এভাবে এক লাখ ডিডব্লিউটি (ডেডওয়েট টনেজ) ধারণ ক্ষমতার একটি ট্যাংকার খালাস করতে সময় লাগে ১১ দিন।
এই মুরিং পয়েন্ট হচ্ছে মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে গভীর সাগরে। মাদার ভেসেল মুরিং পয়েন্ট আসার পর সেখান থেকে পাম্প করে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রথমে তেল আনা হবে মহেশখালীর কালারামছড়ার স্টোরেজ ট্যাংকে। সেখান থেকে আবার পাম্প করে পাইপলাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে ইস্টার্ণ রিফাইনারিতে।
প্রকল্প পরিচালক শরীফ হাসনাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বর্তমান পদ্ধতিতে যে জাহাজ থেকে তেল খালাসে ১১দিন লাগে, এসপিএম চালু হলে তা ৪৮ ঘণ্টায় করা যাবে।
বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে জি-টু-জি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিপিসির অধীনস্ত কোম্পানি ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড।
প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।
প্রতিটি পরিশোধিত স্টোরেজ ট্যাংকারের ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার ঘনমিটার এবং প্রতিটি অপরিশোধিত স্টোরেজ ট্যাংকারের ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার ঘনমিটার।
এসপিএম চালু হলে দেশে তেল ধারণক্ষমতাও বেড়ে যাবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।
তিনি বলেন, প্রকল্পে প্রায় ২০০ শতাধিক দেশি-বিদেশি শ্রমিক কাজ করছে। পরে শ্রমিক সংখ্যা আরো বাড়বে। ইতোমধ্যে সমুদ্রের নিচেসহ মোট ১৯৩ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়ে গেছে।
মুরিং পয়েন্ট থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল আনলোড করা হবে।
সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংটি আগামী মাসে চীন থেকে আসার পর সমুদ্রে নির্দিষ্ট জায়গায় তা বসানোর কাজ শুরু হবে বলে জানান শরীফ হাসনাত।
বর্তমানে দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারী বছরে ১৫ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করতে পারে। সেখানে আরেকটি ইউনিট করে পরিশোধন ক্ষমতা ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
বিপিসির চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেন, “সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং হলে তা ইস্টার্ন রিফাইনারির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে। বলতে পারেন, ওইটারই ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ হিসেবে কাজ করবে এসপিএম।”