বুধবার মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সার কেনার তিনটি প্রস্তাব ছাড়া আরও আটটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন।
২০২১-২২ অর্থবছরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফর্টিগ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ২ লাখ ৮০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি আগেই স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
সামসুল আরেফিন জানান, গত ১৯ মে সিসিইএ সভার অনুমোদনক্রমে ২০২১-২২ অর্থবছরে কাতারের মুনতাজ কোম্পানির কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী এদিন প্রতি টন ৪৩৬ দশমিক ৮৩ ডলার হিসাবে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মোট মূল্য দাঁড়াচ্ছে এক কোটি ৩১ লাখ ৪ হাজার ৯০০ ডলার বা ১১১ কোটি ৭১ লাখ ৯২ হাজার ৭২৫ টাকা।
একইভাবে গত ১৯ মে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের আলোকে সৌদি বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (সাবিক) কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে প্রতি টন ৪২৫ দশমিক ৮৩ ডলার হিসাবে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয় ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি। এতে মোট খরচ হবে এক কোটি ২৭ লাখ ৭৪ হাজার ৯০০ ডলার বা ১০৮ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার ২২৫ টাকা।
সভায় খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় রামগড় স্থল বন্দর উন্নয়নের পূর্ত কাজ ১২৩ কোটি ৯১ লাখ ৭১ হাজার ৪৬৩ টাকায় ঢাকার মনিকো লিমিটেডকে দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। আন্তর্জাতিক উম্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করার পর এই কাজটি করার জন্য ছয়টি দরপত্র জমা পড়েছিল; সেখান থেকে সর্বনিম্ন দরদাতাকে বেছে নেওয়া হয়।
এদিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসাবে উজু ও সুজিন কোরিয়া নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্ট ভেঞ্চারকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই কাজে ব্যয় হবে ৪১ কোটি ৩০ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
বৈঠকে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের (৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের ৯৮টি লটের মধ্যে ৪৬টি লটে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২১ হাজার ১৯০ কপি বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে ৭৩ কোটি ৮২ লাখ ৮১ হাজার ১৪০ টাকায় ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২১ হাজার ১৯০ কপি বইয়ের কাজ দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক উম্মুক্ত পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হলে মোট ৩০১টি দরপত্র জমা পড়েছিল জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, এর মধ্যে ২৮৬টি দরপত্র টিকেছিল। কারিগরি কমিটির সুপারিশের আলোকে সর্বনিম্ন দরদাতাকে বেছে নেওয়া হয়।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এদিন ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রোটিন মাত্রার ৫০ হাজার টন গম আমদানির জন্য জন্য সিঙ্গাপুরভিত্তিক এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনালকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক কোটেশন আহ্বান করা হলে একটি দরপত্র জমা পড়ে। সিঙ্গাপুরের এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি কারিগরি কমিটির যাচাই বাছাইয়ে টিকে যায়। ফলে তারা ২ কোটি ১০ লাখ ৬৯ হাজার ডলার বা ১৭৯ কোটি ৫০ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫০ টাকায় ৫০ হাজার টন গম সরবরাহের অনুমোদন পায়। প্রতিটনের দাম ধরা হয়েছে ৪২১ দশমিক ৩৮ ডলার। রাশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, রোমানিয়া, ইউক্রেন থেকে গম সংগ্রহ করে তারা সরবরাহ করবে।
বৈঠকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিতরণ ট্রান্সফরমার ও পোল কেনার দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। একটি প্রস্তাবে ৮৪ কোটি ৪২ লাখ৬৭ হাজার ৫১৩ টাকায় ১৩ হাজার ৪০টি ট্রান্সফরমার এবং আরেকটি প্রস্তাবে বাংলাদেশ মেশিন ট্যুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ৭১ কোটি ২৩ লাখ ২১৯২ টাকায় ৫১ হাজার ৩৫৯টি এসপিসি পোল বা খাম্বা কেনার কথা বলা হয়।
নেত্রকোণার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা ৪৯৮ দশমিক ৪৫ একর ভূমি উন্নয়ন কাজ ২৩৯ কোটি ৫৫ লাখ ৪৬৮৩২ টাকায় ঢাকার এম/এস নুরুজ্জামান খানকে দেওয়ার প্রস্তাবও সভায় অনুমোদন পায়।