একনেক বৈঠক: উত্তরের ৩ স্থলবন্দরে বসবে স্ক্যানার

উত্তরাঞ্চলের হিলি, বুড়িমারী ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে তদারকি আরও জোরদার করতে শতভাগ পণ্য, এমনকি মানুষের শরীর পর্যন্ত স্ক্যান করার পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2021, 12:58 PM
Updated : 7 Sept 2021, 12:59 PM

মঙ্গলবার ‘হিলি, বুড়িমারী ও বাংলাবান্ধা এলসি স্টেশনের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন নির্দেশনা দিলে, এনবিআর চেয়ারম্যান স্ক্যানার বসাতে আলাদা প্রকল্প নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পরে অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্পটিসহ মোট আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি ভবনে একনেক সভা অনুষ্টিত হয়। ছবি: পিএমও

বৈঠকে স্থলবন্দরের প্রকল্পের আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব স্থলবন্দরে স্ক্যান মেশিন বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

একনেক বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, এসব স্থলবন্দরে মালপত্র স্ক্যান করা এবং বডি পর্যন্ত স্ক্যান করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।… বৈঠকে উপস্থিত এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছেন, এই ব্যবস্থা এই প্রজেক্টে নাই। তবে রাজস্ব ব্যবস্থা থেকে আলাদা একটা প্রজেক্ট এনে এই (স্ক্যানার) ব্যবস্থা করা হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান জানান, প্রকল্পটির মাধ্যমে স্থলবন্দরগুলোর ভৌত অবকাঠামো ও ভৌত সুবিধা বাড়ানো হবে। এর মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরও মনিটরের মাধ্যমে শুল্ক আদায় বৃদ্ধি করে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ জোরদার করা হবে।

“সীমান্ত এলাকায় শুল্ক ও আবগারি কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি করে চোরাচালান এবং অবৈধ বাণিজ্যের প্রসার রোধ করা এই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।“

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পের আওতায় স্থলবন্দর তিনটিতে প্রশাসনিক, আবাসিক, সিপাই ব্যারাক ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণ করা হবে।

মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বৈঠকে প্রায় ৭ হাজার ৫৮৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ের আটটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৫ হাজার ৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে ২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা যোগান পাওয়া যাবে।

অনুমোদন পাওয়া অন্যান্য প্রকল্প হচ্ছে-

>> পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ; ব্যয় ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকা।

>> বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত); ব্যয় বাড়ছে প্রায় ৩৩৩ কোটি টাকা।

>> বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, রংপুর স্থাপন; ব্যয় ৪১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

>> এক্সেলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন; ব্যয় প্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

>> আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্র, মাদারীপুরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বৃহত্তর বরিশাল, ফরিদপুর অঞ্চলে ডাল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, ব্যয় ১৬৮ কোটি টাকা।

>> সিরাজগঞ্জ জেলায় যমুনা নদী হতে পুনরুদ্ধারকৃত ভূমির উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষা (১ম সংশোধিত; ব্যয় বাড়ছে প্রায় ১২৮ কোটি টাকা।

>> সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নং ১৫ পুনর্বাসন; ব্যয় প্রায় ১ হাজার ২০ কোটি ৪২ লাখ টাকা।