স্বপ্ন এবার ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’: জয়

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর এবার নগদ অর্থে লেনদেন হবে না, এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথা বলেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2021, 03:35 PM
Updated : 24 August 2021, 05:00 PM

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেছেন, “ক্যাশলেস সোসাইটি হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ।”

মঙ্গলবার ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে সোনালী ব্যাংকের উদ্যোগে চালু হওয়া রেমিটেন্স সেবা ‘ব্লেজ’ উদ্বোধন করে একথা বলেন তিনি।

সজীব ওয়াজেদ বলেন, “আমার ডিজিটাল বাংলাদেশের এখন নেক্সট (পরবর্তী) স্বপ্ন যে বাংলাদেশের সকল ফাইন্যান্সিয়াল ট্রানজেকশন ক্যাশলেস হয়ে যাবে।”

সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ কীভাবে হবে, তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তারা তাদের মোবাইল ফোনে টাকা পাবে। যে টাকাটা তারা একটা দোকানে গিয়ে খরচ করবে, সেটাও তারা মোবাইলে পেমেন্ট করে দেবে। তাদের হাতে আর ক্যাশ রাখার প্রয়োজন হবে না। তাদের কষ্ট করে আয় করা টাকাটা তাদের থেকে কেউ চুরি করে নেবে না।”

‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ হলে দুর্নীতি নির্মূলেও তা ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রীপুত্র জয়।

“আজকে আমাদের বাংলাদেশের ৫ কোটি মানুষের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। তারা সম্পূর্ণ ক্যাশের (নগদ) উপর নির্ভরশীল। তবে এই ক্যাশ টাকা তো চুরি হতে পারে। তাদের টাকা লুট হতে পারে, দুর্নীতির সুযোগ থাকে। আমরা যখন ক্যাশলেস সোসাইটিতে চলে যাব, তখন দুর্নীতির সুযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।”

তিনি বলেন, “আজ যত সরকারি ভাতা দেওয়া হয়, এটা কিন্তু সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেওয়া হয়। আগে টাকা চুরি করার সুযোগ থাকত, সেই সুযোগ আমরা বন্ধ করে দিয়েছি।”

তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে গত এক দশকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে উপস্থাপন করে জয় বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন হচ্ছে বাংলাদেশকে উন্নত করা, আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, মানুষের জীবনকে আরও সহজ ও উন্নত করা।

কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে গত ১৭ মাসে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল যেভাবে পাওয়া গেছে, তাও তুলে ধরেন তিনি।

“অন্যান্য দেশের সরকার, ধনী ধনী দেশের সরকার বসে গেছে। তাদের সরকার পরিচালনা সম্ভব হয়নি। তাদের স্কুল-কলেজ পরিচালনা বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ তাদের ডিজিটাল সিস্টেম ছিল না।”

জয় বলেন, পূর্ব প্রস্তুতি থাকার কারণেই কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে দ্রুত ডিজিটাল পদ্ধতিতে যাওয়া গেছে।

“আমাদের দেশের অর্থনীতিতে কোভিডের সেই রকম প্রভাব পড়েনি। কারণ আমরা এই প্রস্তুতি অনেক আগে থেকে নিয়ে রেখেছি।”

তিনি বলেন, বর্তমান নয়, ভবিষ্যতে কী প্রয়োজন, তাতে নজর আওয়ামী লীগ সরকারের।

“আমরা শুধু ভাবছি না যে বাংলাদেশ এখন কোথায়? আমরা সারাক্ষণ ভাবছি, বাংলাদেশকে আমরা কোথায় নিয়ে যেতে চাই? আজকে এই ১০ বছর পর বাংলাদেশ কেমন হবে? সেটাই হচ্ছে আমাদের ভিশন, সেটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের ভিশন।”

জয় বলেন, “আমাদের আওয়ামী লীগ সরকারের স্বপ্ন ভবিষ্যত বাংলাদেশ হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল, ক্যাশলেস।”

‘ব্লেজ’ সেবাটি ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’র পথে এগিয়ে যাওয়ার একটি ধাপ, বলেন তিনি।

সোনালী ব্যাংক বলছে, এই সেবা চালু হলে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাত্র ৫ সেকেন্ডে বাংলাদেশে রেমিটেন্স গ্রহীতার অ্যাকাউন্টে জমা হবে।

বাংলাদেশে ৩৫টির মতো ব্যাংক ব্লেজ সেবাটি দিতে পারবে এবং সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা এই সেবা পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের গুরুত্ব তুলে ধরে জয় বলেন, “আমাদের দেশের কিন্তু সব থেকে বড় আয় হচ্ছে প্রবাসীদের রেমিটেন্স। গার্মেন্টসের চেয়েও কিন্ত বেশি আয় আসে রেমিটেন্স থেকে।

প্রবাসীদের দেশে টাকা পাঠাতে হলে যেই দীর্ঘসূত্রতা ও সীমাবদ্ধতা মোকাবেলা করতে হয়, তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকাল এই ডিজিটাল যুগে এই লিমিটেশন আমাদের থাকার কোনো মানে নেই। সেজন্যই আজকে এই ব্লেজ সার্ভিসের উদ্বোধন।”

সারাবিশ্বে প্রবাসীরা যেখানেই আছে তাদের কাছে এই সার্ভিস পৌছে দেওয়ারও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ব্লেজ সেবা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ অন্যান্য সব ব্যাংককে এতে যুক্ত হওয়ার অনুরোধ জানান।

ব্লেজ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সোনালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান এতে যুক্ত ছিলেন।