বিএসএমএমইউতে হচ্ছে শিশু হৃদরোগের পূর্ণাঙ্গ ইউনিট

নবজাতক শিশুদের জন্মগত হৃদরোগের অপারেশন করতে দেশে প্রথবারের মতো পূর্ণাঙ্গ একটি শিশু কার্ডিওলজি ও শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট করতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2021, 12:28 PM
Updated : 28 July 2021, 12:28 PM

এজন্য ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শিশু কার্ডিওলজি ও শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

বুধবার স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি- একনেক এর সভায় অনুমোদন পায়।

সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “বিএসএমএমইউতে পূর্ণাঙ্গ শিশু কার্ডিওলজি ও শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট স্থাপন দেশের স্বাস্থ্য খাতের একটি মাইলফলক প্রকল্প।

“শিগগির প্রকল্পটির কাজ শুরু করে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার টার্গেট নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বিএসএমএমইউ।“

এরপর প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, “দেশে প্রতিবছর প্রায় ৩৩ লাখ নবজাতকসহ ১৮ বছরের নিচে প্রায় ৬৭ লক্ষ শিশুর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার শিশু জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

“এসব শিশুর চিকিৎসা সেবা ও সার্জারি প্রদান করে জন্মগত হৃদরোগ থেকে মৃত্যুহার সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনার উদ্দেশ্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।“

এছাড়াও প্রকল্পটির মাধ্যমে সরকারি মেডিকেল কলেজ পর্যায়ে নবজাতকসহ জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসাসেবা ও সার্জারি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তোলা হবে বলে তিনি জানান।

এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নবজাতকসহ জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসা সেবা ও সার্জারি বিষয়ে প্রতি বছর প্রায় ২০ জন চিকিৎসককে উচ্চতর শিক্ষা (এমডি, এফসিপিএস, এমএস কোর্স) প্রদানের সুযোগ তৈরি হবে।

নাসিমা বেগম জানান, বিএসএমএমইউ এর এফ ব্লকের ৮ম ও ৯ম তলা ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করে ৩ হাজার ৪৩৮ বর্গমিটার আয়তনে এই ইউনিট তৈরি করা হবে।

এই প্রকল্পসহ বুধবার একনেক বৈঠকে প্রায় ২ হাজার ৫৭৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ের ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ১৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বৈদেশিক ঋণ থেকে ৪২৫ কোটি টাকার যোগান দেওয়া হবে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্যান্য প্রকল্প হচ্ছে-

>> ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে ৩টি আন্ডারপাস এবং পদুয়ার বাজার ইন্টারসেকশনে ইউলুপ নির্মাণ; ব্যয় হবে প্রায় ৫৬৯ কোটি টাকা।

>> জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ময়মনসিংহ জোন) (১ম সংশোধিত); ব্যয় বাড়ছে প্রায় ১১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

>> অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ; ব্যয় হবে প্রায় ১৪৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

>> ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিং অ্যান্ড বায়োমেটেরিয়াল রিসার্চ-এর সেবা ও গবেষণা সুবিধাদির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ; ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৭৪ কোটি টাকা।

>> জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ (৬৪ জেলা) (৩য় সংশোধিত); ব্যয় বাড়ছে প্রায় ৩১ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

>> দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আয়রণ ব্রিজ পুন:নির্মাণ-পুনর্বাসন (১ম সংশোধিত); ব্যয় বাড়ছে প্রায় ৪৯৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

>> পদ্মা বহুমুখী সেতুর ভাটিতে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং ও টংগিবাড়ী উপজেলাধীন বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ; ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৬ কোটি ১২ লাখ টাকা।

>> প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক প্রকল্প; ব্যয় হবে ৪২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

>> বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, ঠাকুরগাঁও; ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা।