লকডাউনে শিল্প কারখানা খুললে ব্যবস্থা: প্রতিমন্ত্রী

মহামারী নিয়ন্ত্রণের লকডাউনের মধ্যে কোনো শিল্প কারখানা খুললে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2021, 10:33 AM
Updated : 26 July 2021, 10:34 AM

ঈদ পরবর্তী কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিন সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এর আগে কয়েকদফা লকডাউনে শিল্প কারখানা খোলা রাখা হয়েছিল।

কিন্তু মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় গত ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে শিল্প কারখানাও বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

এর মধ্যেও কিছু শিল্প কারখানা খোলা রাখা হচ্ছে বলে খবর মিলছে।

তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না-  প্রশ্ন করা হলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কেউ কারখানা খুলে থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি।”

সংক্রমণ যে গতিতে ছড়াচ্ছে, তাতে এখন কঠোর বিধিনিধেষের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কোরবানির পশুর চামড়া সংশ্লিষ্ট খাত, খাদ্যপণ্য এবং কোভিড-১৯ প্রতিরোধে পণ্য ও ওষুধ উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘কঠোর’ বিধিনিষেধের আওতার বাইরে রয়েছে।

দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা কারখানা খোলার দেনদরবার করলেও তাদের হতাশ করেছেন ফরহাদ হোসেন।

তিনি বলেছেন, লকডাউনের মধ্যে পোশাক কারখানা খোলা নিয়ে সরকারের এখন পর্যন্ত কোনো চিন্তাভাবনা নেই।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “করোনা যে পরিস্থিতিতে ছড়িয়ে গেছে, এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

“আমরা কঠিনভাবেই তো প্রজ্ঞাপন জারি করেছি। এ ব্রেকটা খুব দরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সংক্রমণ কমানোর জন্য ব্রেক প্রয়োজন। ব্রেকটার জন্য এটাই উপযুক্ত কৌশল, সেটি হচ্ছে বিধিনিষেধ।”

বিধি-নিষেধ কঠোরভাবে পালনের কথা থাকলেও সড়কে চলাচল বাড়ছে।

লকডাউনের প্রথম দিন শুক্রবার সকালে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের ইকুরিয়ায় বিজিবির তল্লাশি চৌকি। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “পোশাক কারখানা ও রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা বন্ধ থাকায় লাখ লাখ কর্মীরা আর বের হচ্ছেন না। এরা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে অনেককে বাইরে আসতে হচ্ছে।”

“হাসপাতাল, জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত মানুষ বের হচ্ছেন। হাসপাতালে যারা আছেন তাদের অ্যাটেনডেন্টরা আছেন, তাদের বের হতে হচ্ছে। রাস্তায় বের হয়ে মানুষ বলছে, চাকরিতে যেতে হচ্ছে। তারা যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম বলেছে, আমরা সেগুলো যাচাই করছি।”

মহামারী ও লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৭ লাখ মানুষকে আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

“খাবারের অভাব হলে বাইরে বের হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ৩৩৩ হটলাইন চালু আছে, ওটা কোনো কারণে ফেল করলে স্থানীয়ভাবে দেওয়া নম্বরে যে কেউ ফোন করলেও খাবার চলে যাবে, সেই নির্দেশ দেওয়া আছে।”

সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরি আইনে বলা আছে পাঁচ বছর পর পর সবাই সম্পদের হিসাব দেবে।

“যাতে করে আয় বহির্ভূত কোনো সম্পদ আছে কি না, সেটা আমরা চেক করতে পারি। সরকারি চাকরিজীবীরা ট্যাক্স রিটার্ন দেবেন। আমাদেরকেও তাদের সম্পেদের হিসাব সাবমিট করতে হবে। কেউ তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাইলে আমরা দিতে পারব।”